নওগাঁয় বৃদ্ধি পাচ্ছে বাণিজ্যিক বাহারি মাছ চাষ
নওগাঁ প্রতিনিধি
🕐 ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২৪
![নওগাঁয় বৃদ্ধি পাচ্ছে বাণিজ্যিক বাহারি মাছ চাষ](http://www.kholakagojbd.com/media/uplaod/202406/111%20(1).jpg)
নওগাঁয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পুকুরে বাণিজ্যিক অর্নামেন্টাল ফিশ/বাহারি মাছ চাষ। শিক্ষিত বেকার যুবকরা বাহারি মাছ চাষের দিকে এগিয়ে আসায় কমছে বেকারত্বের হারও। তবে মাছগুলো পরিবহনে বিশেষায়িত কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়তই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে খামারীদের। আগামীর সম্ভাবনাময় দামী এই মাছ চাষের দিকে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন খামারীরা।
সাধারণত বাসা কিংবা বড় বড় হোটেল এমনকি অফিসের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় হরেক রকমের বাহারি মাছ। বর্তমানে সৌখিন মানুষদের শখের অন্যতম পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এই অর্নামেন্টাল ফিশ। নওগাঁয় দিন দিন এই মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার সদর, আত্রাই, বদলগাছী, পত্নীতলা, ধামইরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলায় সাধারণ মাছের সঙ্গে পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাহারি মাছ। স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী পিকেএসএফের অর্থায়নে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মৎস্য খাতের আওতায় ২২-২৩ অর্থবছরে অর্নামেন্টাল বা বাহারি মাছ চাষ” প্রদর্শনীর মাধ্যমে উৎসাহী চাষীদের দিয়ে বাহারি মাছ চাষ শুরু করেছে।
জেলার বদলগাছী উপজেলার কামারবাড়ি গ্রামের মাছচাষী আবু রায়হান সিদ্দিক বলেন,মৌসুমীর সার্বিক সহযোগিতায় ৫টি পুকুরে বাহারি মাছ চাষ করেছেন। তিনি সিল্কি কই কার্প ও কমেট মাছের রেণু সফলভাবে উৎপাদন করেছেন। বর্তমানে তার পুকুরে বাহারি কই কার্প, কমেট, বাটার ফ্লাই, অরেন্টা ফিশ, মলি ও গাপ্পি মাছ চাষ হচ্ছে। প্রতিটি মাছ পিচ হিসেবে বিক্রি হওয়ায় বাজারে ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে তিনি যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনিভাবে তার দেখাদেখি অনেক উদ্যোক্তারাও বাহারি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই বাহারি মাছ করে ভাগ্যের বদল করতে পারেন বলে জানান রায়হান।
একই উপজেলার আরেক মাছচাষী দেবনাথ চৌধুরী বলেন, তিনি রায়হানের কাছ থেকে রঙ্গিন মাছ নিয়ে চাষ করেছেন। মাছগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি অনেক বড় হয়। বাজারে গিয়ে এই মাছ বিক্রির কোন ঝামেলা হয়না। রঙ্গিন মাছ দেখে ক্রেতারা সহজেই ক্রয় করেন। অনেক মানুষই এই রঙ্গিন মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
নওগাঁ শহরের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন বলেন, বাসার অ্যাকুরিয়ামের জন্য রঙ্গিন মাছ কিনতে আর ঢাকা কিংবা অন্য কোথাও যেতে হয় না। খুব সহজেই নওগাঁ থেকে মাছ সংগ্রহ করা যাচ্ছে। নওগাঁয় পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে রঙ্গিন মাছ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়সহ সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারলে রঙ্গিন মাছ চাষই শিক্ষিত বেকার যুবকদের ভাগ্য বদলের দ্বার হিসেবে কাজ করবে।
মৌসুমীর মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহারিয়া হোসেন বলেন, মৌসুমী সব সময় নওগাঁর মানুষদের অধিক লাভজনক নতুন নতুন ফসল চাষ করা থেকে শুরু করে কৃষি বিভাগের সকল খাতেই সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক পর্যায়ে মাছচাষী রায়হানকে মৌসুমীর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে রঙ্গিন মাছ চাষ শুরু করেছি। ফলাফল ভালো হলে নওগাঁর আগ্রহী উদ্যোক্তাদের বড় পরিসরে এই রঙ্গিন মাছ চাষে সার্বিক সহযোগিতার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো: বায়েজিদ আলম বলেন, স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি সরকারিভাবেও জেলার কয়েকটি উপজেলায় আগ্রহী মাছচাষীদের মাধ্যমে রঙ্গিন মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। তবে এই মাছ চাষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুব সহজেই নিরাপদে চালান করার মতো বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা এখনোও গড়ে না ওঠার কারণে মাছচাষ সম্প্রসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। রঙ্গিন মাছ সাধারণ মাছের মতো নয় তাই এই মাছের ক্রেতা সারা দেশেই রয়েছেন। এই রঙ্গিন মাছ চালানের জন্য বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা সৃষ্টি করা গেলে আরো খুব দ্রুতই নওগাঁসহ দেশব্যাপী এই রঙ্গিন মাছ চাষের মাধ্যমে নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হতো বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
![](http://www.kholakagojbd.com/images/archive-image.jpg)