পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, সাড়া বাংলাদেশে গত ১৭টি বছর অত্যাচার-জুলুম ও স্ট্রিম রোলার চালিয়েছিল এ আওয়ামী লীগ। আমরা এর প্রত্যেকটি জুলুম ও হত্যার বিচার চাই। আমরা কাউকে ক্ষমা করি নাই। তবে যারা পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি বাঁচানোর জন্য আ.লীগের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলেছেন তাদের সাধারণ ক্ষমা। কিন্তু যারা ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিছিল করেছেন তাদের ক্ষমা নাই।

আজ শুক্রবার পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাখারীকাঠীতে বাংলাদেশ জামায়াত-ইসলামীর এক কর্মী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, আ.লীগের জন্ম’ই হয়েছিল হত্যার মধ্য দিয়ে। এ আ.লীগের শেখ মুজিব ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার শাহেদ আলীকে সংসদে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিলো। আ.লীগের ইতিহাস-ই ছিলো হত্যার ইতিহাস, পিল খানায় বাংলাদেশের গর্ব, অহংকার সেনাবাহিনীর ৫৭ জন গর্বিত সন্তানকে তারা হত্যা করেছিলো, যা একটি যুদ্ধেও এতো সংখ্যক অফিসার শহিদ হয় নাই; যা তারা এ তিনদিনে এ হত্যা করেছে।

মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, ২০১৩ সালে তথাকথিত ওই ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল থেকে আল্লামা সাঈদীকে মিথ্যা মামলায় মিথ্যা রায় দিয়েছিলো। সেই প্রতিবাদে যখন সাড়া বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিলো তখন ওই কুরআন প্রেমিক জনতার বুকে খুনি হাসিনার নির্দেশে গুলি করে ৩ শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। ৫ ই মে শাপলা চত্বরে এই দেশের শ্রেষ্ট সন্তান আলেম সমাজ একত্রিত হয়েছিলো নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে তখন ভারতের প্রেসক্রিপশনে খুনি হাসিনা রাতের আঁধারে হাজার হাজার আলেমকে গুলি করে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার হাত লাখো মানুষের রক্তে রঞ্জিত, হাজারো আলেমের রক্তে রঞ্জিত।

মাসুদ সাঈদী বলেন, আমি আমার বাবা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাথে একটু দেখার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন বারান্দায় অপেক্ষা করেছি, দরজায়-দরজায় কেঁদেছি কিন্তু ওই খুনি হাসিনার জন্য একটি বারের জন্যও আমাকে দেখা করতে দেয়নি। পৃথিবীর কোন আইনে আছে মৃত্যু পথযাত্রী পিতার সাথে তার সন্তানকে দেখা করতে দেয় না, তারা পরিকল্পিতভাবে আমার পিতাকে হত্যা করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করেছে এই খুনি শেখ হাসিনা আর এসব কারণেই তার পতন হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই পিরোজপুর-১ আসনে আমার পিতা দুই বারের এমপি ছিলেন। তার পরে এ আসনে আরো দুইজন এমপি ছিলে তারা কি করেছে তা আমি বলতে চাই না। আমি আল্লামা সাঈদীর সন্তান, তার পবিত্র রক্ত আমার শরীরে, আমি আজকে আপনাদের কাছে ওয়াদা দিয়ে যাচ্ছি যদি আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে দিয়ে আপনাদের খেদমত করার সুযোগ দেন; আমাকে আপনাদের খাদেম বানান তাহলে আমি ওয়াদা দিয়ে যচ্ছি আমার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা নাজিরপুর-পিরোজপুর ও জিয়ানগরকে ঢেলে সাজাব ইনশাআল্লাহ্।

এসময় উপস্থিত ছিলেন -জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন ফরিদ, নায়েবে আমির আব্দুর রব, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, জেলা জামায়াতের সদস্য ড. আব্দুল্লাহীল আল-মাহামুদ, উপজেলা আমির আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি কাজী মো. মোসলেউদ্দীন, বাংলাদেশ ইসলামিক লইয়াস ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এ্যাড. আবু সাঈদ মোল্লা, সাবেক ছাত্রনেতা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র শিবির সভাপতি আবু হানিফ শেখ প্রমুখ।