ইউছুফকে বাঁচাতে সহযোগিতা চায় পরিবার
ভোলা প্রতিনিধি
🕐 ৩:২৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৩, ২০২৪
ভোলা সদর উপজেলার কালি বাড়ি রোর্ডের আলগী গ্রামের ইউছুফ নামের শিশু ছেলেটি পড়া-লেখা, খেলা-ধুলা, ছোটা-ছুটি আর হই-হুল্লোড়ে চারদিক মাতিয়ে রাখতেন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে তার সখ্য ছিল একটু বেশী।
হঠাৎ একদিন শিশু ইউছুফ (৯) নিউরোলজি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ১৪ বছর চিকিৎসা করিয়ে- টাকা, সম্পদ হারিয়ে মা আজ অসহায়। ১৪ বছর আগের শিশুটি আজ ২৩ বছরের যুবক, সেই যুবক ইউছুফকে বাঁচাতে চান তার মা জীবন নেসা ঝন্না। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য পেলে তিনি তার ছেলেকে ভারতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাবেন। অন্য যুবকদের মত আজ লেখা পড়া শেষে কাজ কর্ম করে স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন করার কথা থাকলেও নিউরোলজি রোগের কারণে দিন দিন সে ধাবিত হচ্ছে মৃত্যুর দিকে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে প্রেসক্লাবে ঝন্না সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মা ঝন্না জানান, আমার ২ ছেলে ইউছুফ বড় আর রনি ছোট। ২০১০ সালে ইউছুফের বয়স ৯ বছর, সে ৫ম শ্রেণিতে পড়তো। বাবা আছাদুল হক মাইনুদ্দিন দীর্ঘদিন অসুস্থ্, কোন কাজ কর্ম করতে পারে না। হঠাৎ ইউছুফ আবোল তাবোল বলতে থাকে, মানুষ দেখলে তাদের উপর ক্ষেপে গিয়ে হামলা করতে চায়, পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, এই অবস্থায় প্রথমে ভোলাতে ডাক্তার দেখাই। তার পরামর্শে-ঢাক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিউরোলজি বিভাগের ডা. এম বাহাদুর আলী মিয়াকে দেখাই। সেখানে ৫ বছর চিকিৎসা করিয়েও কোন ফল না পেয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ডাক্তার সহযোগী অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান খান (রতন) কে দেখাই। তিনিও ৫ বছর চিকিৎসা করেন। ডাক্তারের ফি, টেস্ট খরচ, ঔষধ আর ঢাকায় থেকে ছেলের চিকিৎসার পিছনে প্রায় কোটি টাকা শেষ করে ফেলেছি। সেখানেও কোন ফল না পেয়ে-বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ডা. মো. রাশেদুল ইসলামকে দেখাই। তিনি সব পরীক্ষা করে চিকিৎসা করতে থাকেন। এর মধ্যে সব টাকা শেষ করে -২০ শতাংশ জমিও বিক্রি করে খরচ চালাতে থাকি। ২ বছর পরে ডাক্তার সাহেব বলেন, ইউছুফের চিকিৎসা আর বাংলাদেশে হবে না। তাকে ভারতে একজন ডাক্তার আছে তার কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা করাতে ২৫ লাখ টাকার মত লাগবে। একথা শুনে ঝন্নার মাথায় পৃথিবী ভেঙ্গে পরে।
ঝন্না আরো জানান, ডাক্তাদের পরামর্শে নিয়মিত চিকিৎসা করাতে জমি বিক্রির টাকাও শেষ, এখন ঘরসহ ভিটাটা বিক্রি করলে ৩-৪ লক্ষ টাকা হবে। আত্নীয় স্বজন মিলে আরো ২-৩ লাখ টাকা দিতে পারবে। বাকি টাকা কোথায় পাবো। এ বলেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। কি হবে ছেলের? কীভাবে হবে চিকিৎসা? এত টাকা মিলবে কোথা থেকে? তাহলে কি আমার ইউছুফের চিকিৎসা হবে না? আমি কি বাঁচাতে পারবো না আমার বাবাটাকে? এসময় তিনি তার ছেলেটা বাঁচানোর জন্য দেশের এবং সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করেন। তিনি তার ছেলের চিকিৎসার জন্য তাড়াতাড়ি ভারতে নিয়ে যেতে চান। খরচের টাকা জোগাড় হলে তাকে ভারতে নিবেন।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ইউসুফের ছোট ভাই রনিও। তিনিও ইউসুফকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
ইউছুফের মায়ের পার্সোনাল বিকাশ (০১৬১৯-৯৫১৪৪১) । এই নম্বরে ইউসুফের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানো যাবে।
খোলা কাগজ/এজে