পূর্বাচল প্রকল্প এলাকায় শেখ হাসিনার পরিবারসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে বরাদ্দকৃত প্লট বাতিলসহ ১৯ দফা দাবি জানিয়েছেন পূর্বাচলের অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা।

আজ বুধবার 'পূর্বাচল আদিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত সমন্বয়ক কমিটির' ব্যানারে ক্ষতিগ্রস্তরা বৈষম্যের বিরোধের দাবি নিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনের সামনে মানবন্ধন করেন। এসময় তারা অবিলম্বে আবেদন জমা নেয়া ও আবেদনকৃতদের বৈষম্যহীনভাবে প্লট বরাদ্দের দাবি জানান। মানববন্ধনে অংশ নেয়া দুই শতাধিক মানুষ রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। পূর্বাচল অধিবাসী (ভূমি) ক্ষতিগ্রস্থ পূনর্বাসন ও বাস্তবায়ন সমন্বয়ক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মো. দুলাল হোসেন দাবিগুলো উপস্থাপন করেন। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব বরাবরও স্বারকলিপি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, মূল অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা আবেদন করতে পারেনি তাদেরকে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া; মূল অধিবাসীদের নামে ৩ কাঠা, ৫ কাঠা, ৭.৫ কাঠা ও ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়া; উন্নয়নের নামে গত ১৭ বছরে ভবন, স্টেডিয়াম এবং রাস্তা উন্নয়নের নামে যে সকল দুর্নীতি করা হয়েছে তদন্ত করে তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অতি দ্রুত বসবাস উপযোগী করে তোলা ; পূর্বাচল নতুন শহর এলাকায় শিক্ষিত মেধাবী বেকার ছেলে মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরির ব্যবস্থা করা; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের নামে পূর্বাচল স্টেডিয়ামের নামকরণ; অধিবাসীদের ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য স্থায়ীভাবে ক্লাবের জমি বরাদ্দ; প্রতিটি সেক্টরে কবরস্থানের ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তারা।

এসময় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দুলাল হোসেন বলেন, আমরা যারা প্লট পাবার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলাম তাদের মধ্যে হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে ৫ কাঠার প্লটের জন্য ৩০ হাজার টাকা করে জমা নেয়া হয়েছিল। দুই কিস্তিতে জমা দিয়েছি। কিন্তু গাজী (গোলাম দস্তগীর গাজী) আমাদের ৫ কাঠার প্লট তিন কাঠা করেছে। আমাদের পাঁচ কাঠার প্লটগুলো পূর্ব মূল্যমানে চাই।

তিনি আরও বলেন, গত সরকার ১৪০০ প্লট দিয়েছে। সেই প্লটগুলোর মধ্যেও ভুয়া প্লট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দালাল চক্র একেক জনকে ১০০-২০০ করে প্লট দিয়েছে। তাদের এই প্লট বাতিল করতে হবে।

পূর্বাচলের আদিবাসীরা গত ৩০ বছর যাবত ক্ষতিগ্রস্ত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা খুবই দুর্দশার মধ্যে আছি, অসহায় জীবনযাপন করছি। যার দালান ছিলো সেও টিনের ঘরের মধ্যে জীবন যাপন করছে।

দাবির প্রেক্ষিতে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, আগামী শনিবার থেকে আমিসহ আমার কর্মকর্তারা পূর্বাচলে অফিস করবো। প্রতি শনিবারে আমি পূর্বাচল অফিস করবো। আপনারা ধাপে ধাপে আপনাদের অভিযোগ নিয়ে আসবেন। আমরাও জানি পূর্বাচলে অনেক সমস্যা আছে। আমরা সবার দাবির কথা শুনবো এবং আগে যেগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলো নিয়মের বাইরে গেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৪ সদস্যের একটি কমিটি করেছি। তারা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়। আমরা চাই সবার যোগ্য পাওনা তারা বুঝে পাক।