ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দেবিদ্বারে মাদক কারবারিদের থেকে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
🕐 ৭:০৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৪

দেবিদ্বারে মাদক কারবারিদের থেকে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

কুমিল্লার দেবিদ্বারের বড়শালঘর ইউনিয়নে বেড়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের তাণ্ডব। এলাকায় মাদক বিক্রির টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বাগ-বিতন্ডা, মাদক বিক্রি বিস্তার নিয়ে একাধিক সংঘর্ষ এবং বিক্রি ও সেবনে বাধা দেওয়াতে মাদক কারবারিরা অন্তত ৬জন স্থানীয় বাসিন্দাকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এর প্রতিবাদে বুধবার (১০জুলাই) বড়শালঘর ইউনিয়নের সংচাইল স্টেশন ও বড়শালঘর গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে। মানবন্ধনে ওই এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে খাদিজা বেগমসহ আরো কয়েকজন বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের কারণে বড়শালঘরের প্রায় ঘরে আজ অশান্তির আগুন জ্বলছে। স্থানীয় প্রশাসন এসব মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলেও কয়েকদিন পর জেল থেকে বের হয়ে আবার বেপরোয়া হয়ে উঠে তারা। এদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। এ গ্রামে বসবাস করার মতো কোনো পরিবেশ নাই।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, পুলিশের কাছে মাদক বিক্রির তথ্য দেওয়ায় মাদক কারবারিরা গত সোমবার (৮ জুলাই) সকালে ও বিকেলে বড়শালঘর গ্রামের বিল্লাল হোসেন ও মোজাম্মেলসহ স্থানীয় কয়েকজন যুবককে পিটিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনার পরপরই সন্ধ্যায় দেবিদ্বার থানা পুলিশ বড়শালঘর গ্রামের রূপনগর গাঙ্গের পাড়ে অভিযান চালায়। অভিযানে রবি নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে দুই কেজি গাঁজাসহ আটক করে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বলেন, রবির স্ত্রীকে আটকের আগে একই দিন সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রূপনগর গাঙ্গের পাড়ের মাদক ব্যবসায়ী রবির বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে রবি বিলের পানিতে ঝাঁপ দেয়। এসময় রবি গুরুতর আহত হয় এবং পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার পরপরই রবির লোকজনকে সংচাইল স্টেশনে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা গেছে৷ এসময় তারা কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করেছে।

বড়শালঘর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মুনু মিয়া বলেন, গ্রামবাসী পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানতো না। অথচ, রবির লোকজনের হামলায় গ্রামের তিনজন আহত। গুরুতর আহত বিল্লাল হোসেনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। এখন সে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয়ে জানতে রবির বাড়িতে গিয়ে রবি ও তার ছেলেদের কাউকে পাওয়া যায়নি। রবির মেয়ে ময়না আক্তার ও পাখি আক্তার বলেন, আমরা ঢাকা থাকি, আমার বাবা মাদকের সাথে জড়িত কিনা বলতে পারিনা। তবে ওইদিন গ্রামের লোকজন বাড়িতে পুলিশ পাঠায়। আমার মাকে গ্রেফতার করে, তিনি এখন জেলে আছেন।

বড়শালঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল বলেন, বড়শালঘর ইউনিয়নে মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় তৎপর থাকি। মাদক নির্মূল তো আর আমাদের দায়িত্ব না। যারা দায়িত্বে আছে আমরা তাদেরকে সবসময় সহযোগিতা করি। কিন্তু কি লাভ হয়? জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করে।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, দেবিদ্বারে মাদক চলতে দেয়া হবে না। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। মাদকের সাথে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় আমারা তাদের গ্রেফতার করা হবে।

 
Electronic Paper