গত ২৪ ঘন্টায় টানা ভারী বর্ষণে আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে নোয়াখালীতে। এ জলাবদ্ধতার মধ্যে আটকা পড়েছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ। এ বন্যায় ডুবে গেছে সড়ক, বসত বাড়ি ও শতশত মাছের ঘের । পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় দীর্ঘ সময়ের জন্য জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার বাসিন্দাদের।

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলগুলো ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে। ডুবে আছে বসত ঘর ও সড়ক। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই।
তবে জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছেন রিকশাচালক ও শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষরা। রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় তারাও পড়েছেন চরম বিপাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও তেমন খোলেনি। অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের তথ্য অনুযায়ী, নোয়াখালীর আট উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২ হাজার ১৮৫ জন মানুষ।

বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জহির উদ্দিন বলেন, আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের প্রায় সব গ্রামের মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জলাবদ্ধতা কমছে না। নতুন করে বৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি আরো বেড়েছে।

সদর উপজেলার শিবপুরের বাসিন্দা মাসুদ বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি আবার বেড়েছে। গত মাসেও এমন অবস্থা হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন কেউ খবর নিবে না আর সহযোগিতাও করবে না।

নোয়াখালী আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল ৯টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি অবনতির বিষয়টি আমরা জেনেছি। পানিবন্দি কোনো মানুষ যাতে খাদ্যাভাবে কষ্ট না পায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পানি নিষ্কাশনে একাধিক কার্যক্রম শুরু করেছি। আশা করি বৃষ্টিপাত আর না হলে দ্রুতই পানি কমে যাবে।

কেকে/এজে