ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হরিরামপুরে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
🕐 ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৮, ২০২৪

হরিরামপুরে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কৃষকের স্বপ্নের ফসল। উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি ও টানা বর্ষণে ভেসে গেছে ফসলের মাঠ। এতে করে বিপাকে পরেছেন উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। হঠাৎ করে ক্ষেতে পানি আসায় মরিচ, ভূট্টা, চিনা বাদাম, তিল, আউশ ধানসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতির সম্ভাবনায় দিশেহারা কৃষকেরা।

উপজেলার এসময়ের অন্যতম প্রধান ফসল কাঁচা মরিচ। চলতি মৌসুমে উপজেলায় বিন্দু মরিচের আবাদ হয়েছে ১৭৫০ হেক্টর আর কৃষিবিদ মরিচ ১১০৬, কারেন মরিচ ৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রচন্ড খরা ও ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দফায় দফায় ক্ষতির সম্মুখীন হয় মরিচ চাষিরা। মৌসুমের শেষ দিকে কিছুটা মরিচে লাভের আশা উঁকি দিতেই উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে মরিচ ক্ষেতে পানি প্রবেশ করায় রাতারাতিই যেন গাছ টলে পরছে৷ ঝরে পরছে মরিচের ফুল। ফলে কৃষকের লাভের আশা পরিণত হয়েছে গুড়েবালিতে। উপজেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভূট্টা, চিনা বাদাম, তিল ও আউশ ধান নিয়েও বিপাকে চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক।

আজিমনগর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের নাসির উদ্দীন জানান, হঠাৎ করেই চরের নিম্নাঞ্চলে পানি চলে আসায় বাদাম, ভূট্টা, তিল, আউশ ধান তলিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। সময়মতো ফসল তুলতে পারছি না।

এদিকে ক্ষেতে পানি আসায় মরিচের ফলন বিনষ্ট হয়ে পড়ায় কাঁচা মরিচের দামও আকাশচুম্বী। এতে করে সাধারণ ক্রেতাদের কাঁচামরিচ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে এ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে নাভিশ্বাস।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর চরপাড়া গ্রামের সাহেব আলী বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। গাছ ভাল হলেও আশানুরূপ ফলন পায়নি। এর মধ্যেই ক্ষেতে পানি চলে আসে। এতে লাভ তো দূরের কথা চালানই উঠে নাই।

উপজেলার ঝিটকা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হোসেন জানান, এ বাজার থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টন মরিচ রপ্তানি হতো। এ বছর আবাদ ভাল হলেও খরার কারণে ফলন নেই বললেই চলে। এ মৌসুমে ৭ থেকে ৮ টনের বেশি মরিচ আসে নাই। আর এখন তো বন্যার পানি এসেছে। আজকের বাজারে মরিচ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।

খুচরা কাঁচামাল ব্যবসায়ী ওয়াসিম জানান, আজ আমরা মরিচ বিক্রি করছি ২৮০ টাকা করে। আমাদের যেভাবে কিনতে হয়, সেভাবেই বিক্রি করতে হয়। তবে পানি আসায় মরিচের আমদানি খুবই কম। বাইরে থেকে মরিচ আমদানি না হলে দাম আরও বাড়বে।

এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, প্রতিবছরেই বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির মুখামুখি হয় এই এলাকার কৃষকেরা। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ করার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন সচল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার।

টিএ/খোলা কাগজ

 
Electronic Paper