ঢাকা, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪ | ১৬ আষাঢ় ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ নিয়ে ধোঁয়াশা

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৪:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২৪

আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ নিয়ে ধোঁয়াশা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি নিয়ে প্রতিবারই সংশয় দেখা দেয়। যদিও এর আগের দুই কিস্তি নিয়ে সংশয় থাকার পরও অর্থ ছাড় করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এবার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঘাটতি দেড় বিলিয়নের বেশি। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় সংশয়টা বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল ২৪ জুন আইএমএফের বোর্ড সভায় ঋণ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। যেকোনো মূল্যে এই তৃতীয় কিস্তি পেতে রিজার্ভ বাড়াতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে চলতি জুনে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। যা পূরণে ঘাটতি দেড় বিলিয়নের বেশি। সবশেষ ২২ জুনের রিজার্ভের হালনাগাদ তথ্য পাঠাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর লক্ষ্য পূরণ না হলে ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার ২৪ জুন বোর্ড অনুমোদন পাওয়া নিয়ে ঝামেলা হতে পারে।

এ বিষয় বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, রিজার্ভের নতুন লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন হলেও তা পূরণ করা কঠিন। কারণ, দেশের রিজার্ভে বৈদেশিক মুদ্রা যেসব উৎস থেকে আসে ও ব্যয় হয় সেখানে ভারসাম্য নেই। ফলে রিজার্ভ ধরে রাখা যাচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আইএমএফের অন্যান্য শর্ত পূরণে অগ্রগতি থাকায় ঋণে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে পারে বোর্ড।

এর ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। এখন এ রিজার্ভ ২৪ বিলিয়নের ঘরে নেমেছে। ত‌বে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে খরচযোগ‌্য রিজার্ভ আরও কম, ১৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি বন্ধ করে ডলার কেনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম ৬ হিসাবে ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন। সেখান থেকে চলতি দায় বাবদ ৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। যা আইএমএফের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন থেকে প্রায় ১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার কম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত ৬ জুন পর্যন্ত রিজার্ভের তথ্য আইএমএফকে সরবরাহ করা হয়েছে। তাদের লক্ষ্যের তুলনায় প্রায় দুই বিলিয়ন ঘাটতি ছিল। চলতি জুনে মাত্র ৪০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। কারেন্সি সোয়াপের (ডলারের মাধ্যমে টাকা অদল-বদল) মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় আইএমএফের আপত্তি থাকায় বাজার থেকে সরাসরি ডলার কেনা চলমান রয়েছে। তার মতে, বিদেশ থেকে ঋণ এসেছে। বিশ্বব্যাংকের ৫০০ মিলিয়নসহ আরও ৯০০ মিলিয়ন ঋণ শিগগিরই আসবে। তাহলে ঘাটতি কমে যাবে। নতুন করে ঋণের ৯০০ মিলিয়ন যোগ হলে রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন পার হতে পারে।

জানা গেছে, আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার ও ডিসেম্বর শেষে ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ১৬ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার এবং একই বছরের জুনে ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 
Electronic Paper