ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাবিতে ছাত্রলীগ কর্মী আটক, মুচলেকায় পেলেন ছাড়া

রাবি প্রতিনিধি
🕐 ৯:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪

রাবিতে ছাত্রলীগ কর্মী আটক, মুচলেকায় পেলেন ছাড়া

সিট বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ্ হলে এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ প্রশাসন এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কেউ বাদী হয়ে মামলা করতে না চাওয়ায় তাকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে এনে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর নাম তৌরিদ কান্তি দাস শিমুল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি মাদার বখশ্ হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত সরকারের সহযোগী হয়ে হলে সিট বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি হলের ২৪৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

হল সূত্রে জানা গেছে, শিমুলের হলে অবস্থানের বিষয়টি শনিবার রাতে জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা কয়েকজন শিমুলের কক্ষে গিয়ে খোঁজখবর নেন। খোঁজ নিয়ে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, হল গেটে টাঙিয়ে দেওয়া ব্যানারে ‘ছাত্রলীগ বা, ছাত্রলীগের দোষরদের তালিকায়’ শিমুলের নাম রয়েছে। এবিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে, সে সব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং সে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করে। এমনকি সে কয়েকটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্র সংগঠনের মেসেঞ্জার গ্রুপে মেসেজ দিয়ে জানায়, ‘মাদার বখশ্ ২৪৪, আমার উপর অ্যাটাক করতেছে, সবাই চলে আসো।’

এবিষয়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু হানজালা বলেন, শিমুল প্রথম থেকেই বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরী করার চেষ্টা করতেছিলো। পরে বিষয়টা প্রাধ্যক্ষ স্যারকে জানালে, তিনি তাকে হল ছেড়ে চলে যেতে বলতে বলেন। আমরা তাকে সেটা জানিয়ে চলে আসি। এরপর শুনি সে হল ছেড়ে যায়নি। ফলে, তার রুমের সামনে অনেক শিক্ষার্থী জড়ো হয়। পরে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষ স্যারসহ হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেকেই আসেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মাদার বখশ্ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহ্দী বলেন, ছাত্রদের বক্তব্যমতে, সে নিপীড়ক এবং নিপীড়কের সহযোগী। চাঁদাবাজি, এবং ছাত্রদের হল থেকে বের করে দেওয়ার কাজে সে সহযোগিতা করেছে। ছাত্রদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ প্রশাসন প্রক্টরের সাথে আলোচনা করে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে মাদার বখশ্ হলের শিক্ষার্থী ও হল প্রশাসন অভিযক্ত ওই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আজ (রবিবার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা থানায় এসে তাদের জিম্মায় ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা হয়নি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছেলেটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ ও হলের ছাত্ররাও কেউ বাদী হতে না চাওয়ায় তার নামে কোনো মামলা হয়নি, তাই ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সে আর হলে থাকবে না।

 
Electronic Paper