কুবি কর্মচারীর বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ
হাছিবুল ইসলাম সবুজ, কুবি
🕐 ১:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও প্রকৌশল শাখার প্লাম্বার জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য রেড সেল গঠন করেছিল কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ। গত ৪আগষ্ট শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল করলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ তাদের উপর ওপেন ফায়ার ও লাঠিচার্জ করে। ওই মিছিলে দেশীয় অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের মারধর এবং ৩আগষ্ট বিজয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মিটিং করে শিক্ষার্থীদের দমন করার পরিকল্পনা করেন জসিম। এমন একটা ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
মিটিংয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, কোটা আন্দোলনের নামে বিএনপি, জামাত-শিবির দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। তারা ছাত্র নয়, অছাত্র কর্তৃক রাস্তা প্রতিবন্ধকতা, জ্বালাও-পোড়াও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। এই কাজ করার সাহস পাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার কারণে । প্রতি সেকশনে যদি ১২০০ স্টুডেন্ট ভর্তি হয়। প্রতি বছরে যদি আমরা ১০০ ছাত্রলীগ সৃষ্টি করতে পারি, ১০০ ছাত্রলীগ পাঁচ বছরে ৫০০ ছাত্রলীগ নেতা সেখানে সৃষ্টি হয়ে যায়। আর ৫০০ ছাত্রলীগের দুজন করে কর্মী হলে হাজার-পনেরশো নেতা আমাদের ক্যাম্পাসে থাকত। এই পনেরশো নেতা যদি বাধা দিতো শিক্ষার্থীরা বিশ্বরোডে আসতে পারতো না। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সংকট, সেখানে সারা দেশেই সংকট।
সে সময় তাকে জামায়াত-শিবির রাজাকার এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়; সারা বাংলায় খবর দে, রাজাকারদের কবর দে; এই ধরনের স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
এ বিষয়ে জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আমার নামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমি কখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলাম না। ভিডিও সম্পর্কে তিনি বলেন এগুলো ফেইক ভিডিও। আমার নামে কিছু করিয়েন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের গুন্ডারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন এবং জসিম নিজেও শিক্ষার্থীদের মারধর করছেন বলে ভিডিওতে দেখা যায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন এর ৪৩ এর ৪ ধারায় উল্লেখ আছে ‘কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হইতে পারিবেন না৷’ তিনি সংবিধান অমান্য করে স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রলীগের সমন্বয়ক পাবেল রানা বলেন, যে শিক্ষক কর্মকর্তা বা কর্মচারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলনে বাধা দিয়েছে তাদেরকে আমরা ক্যাম্পাসে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।