ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ১৫ দফা দাবি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
🕐 ৫:৪৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২৪

প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ১৫ দফা দাবি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জামায়াত ও বামের ট্যাগ দিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আজ শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১.৩০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবিসমূহ তুলে ধরেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন আমাদের, ‘যৌক্তিক দাবির বিপক্ষে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় বসে বক্তব্য দিয়েন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। আমাদেরকে জামায়াত শিবিরের ট্যাগ দিয়ে আমরা নাকি অরাজকতা সৃষ্টি করেছি এমন বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। একইসাথে আমাদের আন্দোলনের বিপক্ষে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাদের আন্দোলনে বাধা দিয়ে শিক্ষার্থীর মোবাইল কেড়ে নেওয়ার মতো সাহস দেখিয়েছে।’

তারা আরো বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক যারা আমাদের আন্দোলনের বিপক্ষে সোচ্চার ছিলেন। এই সমস্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আমরা এই ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। অতিবিলম্বে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। না হলে শিক্ষার্থীরা তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।’

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহের মধ্যে আছে-
১. নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। সেজন্য কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ক্যাম্পাসের সামনে পুলিশ বক্স স্থাপন করতে হবে।

২. সরাসরি বাধা প্রদানকারী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধাচারণকারী প্রো-ভিসি, তরিকুল ইসলাম (নিরাপত্তা কর্মকর্তা), জাকিয়া সুলতানা মুক্তা ম্যাম (বাংলা), নজরুল ইসলাম হিরাকে (সহকারিরেজিস্টার) পদত্যাগ/চাকুরীচ্যুত করতে হবে এবং এমদাদুল হক সোহাগ (বিজিই), সোলাইমান হোসেন মিন্টু (একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম), শেখ তারেককে (প্রশাসনিক কর্মকর্তা) বহিষ্কার করতে হবে।

৩. শিক্ষার্থীদেরকে হুমকি দেয়া ও হামলা করা পাবেল (পিএস), শেখ সাদ্দাম (টিএইচএম), মুত্তাকিন ইমন (ইতিহাস)-সহ অন্যান্যদের ৩ কার্যদিবসের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।

৪. হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার আর্থিক খরচ প্রদান করতে হবে। অন্যথায় ছাত্র উপদেষ্টা শরাফত আলী স্যার (বিজিই)-কে পদত্যাগ করতে হবে।

৫. ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. বিভিন্ন হলে রাজনৈতিকভাবে অবৈধ দখলকৃত সিট দখলমুক্ত করতে হবে। হল প্রভোষ্ট আগামী ২ কার্যদিবসের ভেতর শিক্ষার্থীদের মাঝে সাংবাদিক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে অবৈধ দখলকৃত সিট রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক হোক, সে তালিকা প্রকাশ করবেন এবং আগামী ৭ দিনের ভেতর তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সুষ্ঠু বন্টন করবেন এবং এ ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সার্বিক সহযোগিতা করবে। কিন্তু এর ব্যত্যয় ঘটলে হল প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে হবে।

৭. সেশন জট নিরসনে ৪ মাসে সেমিস্টার শেষ করতে হবে এবং ১৫ দিনের পিএলের বন্ধ দিতে হবে ও পরবর্তী দ্রুত সময়ের ভেতর পরীক্ষা শেষ করতে হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১ মাসের ভেতর পরীক্ষার রেজাল্ট দিতে হবে, যথাযথ ক্লাস রুটিন মেইনটেইন করতে হবে এবং এই বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা আগামী ৩ কার্য দিবসের মাঝে ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানগণ নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করবেন।

৮. পূর্বে হওয়া সকল পরিক্ষার ফলাফল আগামী ১ মাসের ভেতর প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় (৭-৮) নাম্বার দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হলে ডিপার্টমেন্ট এর চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

৯. পরীক্ষার ফি, বেতনসহ সকল অর্থনৈতিক লেনদেন এবং পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবস্থা করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট আপডেট করতে হবে।

১০. মার্ক টেম্পারিং প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের আইডি নাম্বার এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের রোল ভিন্ন ভিন্ন হতে হবে।

১১. একই ডেপ্টের ২৫% শিক্ষক একই সময়ে শিক্ষাছুটিতে যেতে পারবেন না। এই মর্মে আইন পাশ করতে হবে।

১২. শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

১৩. মেইন গেইট, মূর‍্যাল, লেকপাড়, কফিহাউস এর কার্যক্রম ২ মাসের ভেতর শেষ করে উদ্বোধন এর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় টেন্ডার বাতিল করে সেনাবাহিনীর হাতে দিতে হবে এবং পরবর্তীতে সকল টেন্ডার সেনাবাহিনীকে দিতে হবে।

১৪. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরনে ১৫ দিনের মাঝে একটি স্মৃতিস্তম্ভ বা মুর‍্যাল তৈরি করতে হবে।

১৫. উপরোক্ত দাবিসমূহ ৭ দিনের ভেতর বাস্তবায়ন করা না হলে, উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, হল প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে এবং নতুন পদে যারা আসবেন কেবল দাবি পূরণের শর্তে পদ লাভ করবেন।

 
Electronic Paper