ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগ না দিলে গেটলকের হুঁশিয়ারি

আল শাহরিয়া, জবি
🕐 ৬:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২৪

জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগ না দিলে গেটলকের হুঁশিয়ারি

ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) অধ্যাপক থেকে নির্দলীয় শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যদি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যতীত বাহিরের কাউকে যদি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে গেটলক কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বেলা সাড়ে এগারোটায় আয়োজিত শিক্ষক-শিক্ষার্থের আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি ও হুঁশিয়ারি প্রদান করেন

বিক্ষোভ মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে কলা ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ প্রদক্ষিণ করে ভাস্কর্য চত্বরে এসে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ভাড়াটিয়া ভিসি আসলে, গেইটে তালা ঝুলবে,’ ‘জবি থেকে ভিসি চাই, দিতে হবে-দিতে হবে' স্লোগান দেন।

এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন নির্দলীয় উপাচার্য দিতে হবে। সকল প্রকার ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে যিনি মেরুদণ্ড সোজা করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন, এ রকম উপাচার্য দিতে হবে। জবির বাহির থেকে উপাচার্য আসলে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে। এসময় বহিরাগত উপাচার্যকে কোনো ধরণের সহযোগিতা না করারও ঘোষণা দেন তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, জবিতে এক ঝাঁক যোগ্য শিক্ষক সমাজ আছে, কিন্তু বারবার সেই শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন থেকে সকল উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক পদে নিজস্ব শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। সকল শিক্ষক নিয়োগ জবি থেকে হতে হবে। আমরা আর ভাড়াতে ভিসি (উপাচার্য) চাইনা, কোনো ভাড়াতে শিক্ষক-কর্মকর্তা চাই না। শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে সক্ষম, এরকম যোগ্যতা সম্পন্ন নির্দলীয় ভিসি (উপাচার্য) চাই। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সেকশন অফিসার পর্যন্ত সকল পদে জবি শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকদের মধ্য থেকে যদি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি নিয়োগ না দেওয়া হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট লক করে দেওয়া হবে। আমরা আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আর কখনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোনি বানাতে দেওয়া হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক নিরপেক্ষ যোগ্য অধ্যাপক আছেন, যারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার সক্ষমতা রাখে।

আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, শিক্ষকদের শুধু বেতন দেয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলেছে। তারা কিছু নিয়ম কানুন দিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখন আমরা নিজেরা নিজেদের বিশ্বিবদ্যালয়ের উন্নয়ন করতে চাই। আমাদের নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা কালচার আছে, সেই কালচার ও নিয়মকানুনই চলবে। ঢাবির কালচার ও নিয়মকানুন দিয়ে জগন্নাথ আর চলবে না।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, প্রায় বিশ বছর পর আজও বলতে হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। একটা ভবন ছাড়া কিছুই হয়নি। না হওয়ার পেছনের কারণ হলো- নেতৃত্বের সংকট ও তথাকথিত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তৃত্ব। বাহির থেকে এসে সবাই রুটিন দায়িত্ব পালন করে গেছে। রুটিন দায়িত্ব পালন করে বিশ্বিবদ্যালয় পরিচালনা করা যায় না। ঢাকার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এই জগন্নাথে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

তিনি আরও বলেন, ঢাবি থেকে ভিসি হিসেবে আসলে, তিনি প্রথমে কে-কেমন, তা বুঝতে ৩ মাস চলে যায়। তারপর সে একটা নিজের মত বলয় গড়ে তুলেন। এভাবে একটা প্রশাসন গড়ে তুলেন। এবার সেই বলয় গড়ে তুলতে দেয়া হবে না।

সমাবেশ এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

 
Electronic Paper