ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে স্লোগান পরিবর্তনের অভিযোগ

ঢাবি প্রতিনিধি
🕐 ২:০৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪

সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে স্লোগান পরিবর্তনের অভিযোগ

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল স্লোগান ছিল ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানটি। ১৪ জুলাই মধ্যরাতে এই স্লোগানের মিছিলে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি শেখ হাসিনা সরকারের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়ে বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী আহত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এরপর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে গণআন্দোলন। এই মূল স্লোগানের জায়গায় অন্যকোনো স্লোগান আনার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উত্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছে অনেকেই।

গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ১৪ জুলাইকে স্মরণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেয়। একই বিষয়ে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, নুসরাত তাবাসসুম, চট্রগ্রাম বিশব্বিদ্যালয়ের খান তালাত মাহমুদ রাফি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্টাটাস দেয়। তাদের সবার ফেসবুক পোস্টে ‘কে রাজাকার? কে রাজাকার? তুই রাজাকার, তুই রাজাকার!’ স্লোগানকে তুলে ধরা হয়েছে। আন্দোলনের মূল স্লোগান বাদ দিয়ে অন্য একটি স্লোগানকে প্রতিষ্ঠিত করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী ১৪ জুলাই রাতের স্লোগানের ভিডিও প্রকাশ করে মূল স্লোগানকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীদের দাবি ‘আমি কে? তুমি কে?, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানই শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সূচনা করেছিল।

স্লোগান বিকৃত করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে ঢাবি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উল্লাহ তুষার বলেন, ‘সমন্বয়ক প্যানেল থেকে যে স্লোগান পোস্ট করছে তার স্থায়িত্ব খুব একটা ছিল না। আরো অনেক ধরনের স্লোগান দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ যেটি আন্দোলন মূল স্লোগান হয়েছিল। হঠাৎ করে সমন্বয়করা কোন অর্থে স্লোগান পরিবর্তন করছে? সে অর্থে- হ্যাঁ, সমন্বয়করা স্লোগান বিকৃত করছে নিজেদের অসাধারণ প্রমাণ করতে।’

ঢাবি শিক্ষার্থী মিশকাত বলেন, ২৪ এর ইতিহাস কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের একার ইতিহাস না। এটা গোটা দেশবাসীর ইতিহাস। এই ইতিহাস আমরা বিকৃত করতে দিবো না কাউকে। আমরা নিজেদেরকে তখন কেন রাজাকার বলেছিলাম, সেটা আমরা সবাই জানি। এটা নিয়ে মজা করা কিংবা বিব্রত হওয়ার কিছু নেই।

এ প্রসঙ্গে রবিবার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে প্রকৃত বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন। ফেসবুক স্টাটাসে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সাহসী স্লোগান ছিলো। আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যে বিভাজনের রাজনীতি ছিল, তা এই স্লোগানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছিলো সেই রাতে। আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ সেই রাতেই ভেঙে গেছিলো। অস্ত্র ও বুলেটের মাধ্যমে আরো কয়েকটা দিন টিকে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা ছিল কেবল।

১৫ তারিখ সকালে আমাকে বহু মিডিয়া ফেইস করতে হইছে রাজাকার স্লোগানের ব্যাখ্যা নিয়ে৷ আমার ব্যাখ্যাটি ছিল অনেকটা এরকম- ‘রাজাকার শব্দের কোনো প্রাসঙ্গিকতা এই আন্দোলনে ছিল না। মূলত আন্দোলনকে দমন করার জন্যই রাজাকার ইস্যুকে সামনে আনা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে এ বক্তব্য অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।’

 
Electronic Paper