শেরপুরে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে ক্ষত
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৭, ২০২৪
ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি তিন দিনেও উন্নতি হয়নি। শনিবার, ৫ অক্টোবর রাত থেকে উজানের পানি কমতে শুরু করলেও ভাটি এলাকার যোগানিয়া ও মরিচপুরান ইউনিয়নের অনেক গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সব মিলিয়ে উপজেলায় এখন পানিবন্দি কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ।
গতকাল রোববার দিনের বেশিরভাগ সময় বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক এলাকায় রাস্তায় অবস্থান করছে মানুষ। তাদের পাশেই রাখা হয়েছে গৃহপালিত গরু, ছাগল, ভেড়াসহ হাঁস-মুরগি। সবজি ক্ষেতসহ মাঠ ডুবে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে খড়ের গাদা। একদিকে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে মাথার উপরে চাল না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে পশুরা নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলার উজানের ইউনিয়নগুলোতে পাহাড়ি ঢলের পানি কমে গেলেও দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষত। অনেক যায়গায় পানির স্রোতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এতে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ির আঙিনা ভেজা থাকায় কারো চুলা জ্বলছে না। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার মৎস্য চাষীরা।
ইতোমধ্যে নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যাকবলিতদের সহযোগিতার জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত তিন দিনে টানা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিজিবিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে উদ্ধার সামগ্রী ও পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, নালিতাবাড়ীতে এখন পর্যন্ত মোট ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এছাড়াও যেখানে প্রয়োজন সেখানে নিকটবর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়নকেন্দ্র হিসেবে চালু করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ওই কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত সহায়তা না পৌঁছানোয় দুর্ভোগে রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা সরকারের কাছে আরো অধিক পরিমাণে জরুরি ত্রাণ সুবিধাসহ পুনর্বাসনের দাবি করেছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদ রানা বলেন, ইতোমধ্যে বন্যার্তদের মাঝে শুকনা খাবার পৌঁছানো হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। যে কোনো পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত।
কেকে/এজে