ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঐ দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের বিকর্ণ দাশ দিব্য এবং প্রণয় কুন্ডু। বিকর্ণ দাশ দিব্য ঐ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং প্রণয় কুন্ডু ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তারা নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী।
রোববার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস সূত্রে বিষয়টা জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘গত শুক্রবার নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। তাদেরকে বিভাগ থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। তাদের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিলেও সেটি সন্তোষজনক হয়নি বলে জানানো হয়। এই বিষয় নিয়ে আজ ডিসিপ্লিন বোর্ডের জরুরী মিটিং হয়। মিটিংয়ে দুই শিক্ষার্থীকে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে ইসলাম ধর্ম অবমাননা নিয়ে বিকর্ণ দাশ দিব্য এবং প্রণয় কুন্ডুর ফেইসবুক পোস্ট এবং কমেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঐ রাতে ঐ দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের দাবিতে ক্যাম্পাস বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঐ দিন রাতেই বিষয়টি নিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। আজ জরুরি ডিসিপ্লিন বোর্ড মিটিংয়ে ঐ দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন প্রশাসন।
এদিকে গতকাল রাতে ফার্মেসী বিভাগের সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সদস্যদের মেসেঞ্জার গ্রুপের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়। ঐ গ্রুপে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বিদ্যুৎ সরকার, সুবর্ণা সরকার, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিপু বিশ্বাস, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তনয় সরকার এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অংকন ঘোষ ইসলাম অবমাননা করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। নতুন করে এই পাঁচ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের দাবিতে সকাল সাড়ে এগারোটায় বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে দেন। এরপর প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অবস্থান শুরু করেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা সাত শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ছাড়া জায়গা ত্যাগ করবেননা বলে জানান। দুপুর আড়াইটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দুই শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফার্মেসী বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা জানান। তারপর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এবং প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিয়ে অবস্থান ত্যাগ করেন।
কেকে/ এমএস