শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫,
৬ বৈশাখ ১৪৩২
বাংলা English

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
শিরোনাম: কাফনের কাপড় পরে গণমিছিল কারিগরি শিক্ষার্থীদের      সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিল রাশিয়া      টালমাটাল নিত্যপণ্যের বাজার      ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত ৩৮      হাইব্রিডে অতিষ্ঠ বিএনপি      রফতানি ঝুঁকিতে বাংলাদেশ      হরিয়ানায় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ৫০ বছরের পুরোনো মসজিদ      
গ্রামবাংলা
ছেলের লাশ খুঁজতে গিয়ে চাকরি হারান পারভেজের বাবা
সুমন আহমেদ, মতলব (চাঁদপুর)
প্রকাশ: রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ৯:২০ পিএম আপডেট: ১৬.০৩.২০২৫ ১১:০৪ পিএম  (ভিজিটর : ১৮৬)
জুলাই বিপ্লবে শহিদ পারভেজের ছবি।

জুলাই বিপ্লবে শহিদ পারভেজের ছবি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহিদ পারভেজের বাবা এখনো তার সন্তানের কবর চিহ্নিত করতে পারেননি। এমনকি মৃত্যুর সঠিক তারিখও নিশ্চিতভাবে জানেন না। তবে শুনেছেন, তার একমাত্র সন্তান পারভেজকে শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ছেলের লাশ খুঁজতে গিয়ে চাকরি হারাতে হয়েছে তাকে। এখন তিনি ছোট্ট এক টং দোকানে চা বিক্রি করে সংসার চালান।

পারভেজ ছোটবেলা থেকেই মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত ছিলেন। বাবার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তার মা অন্যত্র বিয়ে করেন। দাদির স্নেহেই বড় হয়েছেন পারভেজ। কিন্তু সেই দাদিই আজ কাঁদতে কাঁদতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন নাতির শোকে।

পারভেজের বাবা মো. সবুজ বেপারী খোলা কাগজকে বলেন, আমি লঞ্চে সামান্য বেতনে চাকরি করতাম। কিন্তু পারভেজের লাশ খুঁজতে গিয়ে এবং শহিদ হওয়ার পর যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে চাকরিতে সময় দিতে পারিনি। ফলে চাকরি হারিয়েছি। এখন আমি বেকার।

তার সংসারে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও তিন মেয়ে। বড় মেয়ে নুপুরের বিয়ে হয়ে গেছে। মেজো মেয়ে ঝুমুর কলেজে পড়ে আর ছোট মেয়ে খাদিজা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সংসার চালানোর উপায় না থাকায় তিনি বাড়ির পাশে ছোট্ট এক টং দোকানে চা বিক্রি করে কোনোরকমে দিন পার করছেন।

সবুজ বেপারী জানান, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ টাকা সাহায্য পেয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে বড় মেয়ে নুপুরের বিয়ের খরচ মেটান, পুরোনো ঋণ শোধ করেন এবং পারভেজের নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও যাতায়াতে ব্যয় করেন।

১৯ জুলাই তিনি জানতে পারেন, তার ছেলে পারভেজ নিখোঁজ। ছেলের খোঁজ নিতে ঢাকায় ছুটে যান। ২১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে জানতে পারেন, আটটি লাশ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গেলে তাকে জানানো হয়, তার ছেলেকে সেখানেই দাফন করা হয়েছে।

কিন্তু কবরস্থানের লোকজন নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি, কোনটি তার ছেলের কবর। “আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। সর্বোচ্চ শাস্তি—ফাঁসি চাই।” বলেন সবুজ বেপারী।

পারভেজের দাদি মাফিয়া বেগম (৭০) নাতির স্মৃতি ভুলতে পারছেন না। তিনি কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যান। “আমার নাতিরে মাইরা লাইছে, আমি হেগো ফাঁসি চাই।”—এটাই তার শেষ আর্তনাদ।

কেকে/এএম



মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে অনার্স পড়ুয়া কিশোরীর আত্মহত্যা
গজারিয়ায় স্বর্ণালংকারসহ দুই লক্ষ টাকার মালামাল চুরি
ভাঙ্গুড়ায় জঙ্গল থেকে স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি হত্যা
প্রভাবশালীরা গিলে খাচ্ছেন হাওরের জমি, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
কমলগঞ্জে ট্রাক্টর উল্টে ইট চাপায় চা শ্রমিক নিহত, আহত ২

সর্বাধিক পঠিত

স্কুলে শিক্ষক থাকলেও, শিক্ষার্থী কেবল কাগজে-কলমে
৫০ বছরের পুরনো পন্টুন নিয়ে গেছে বিআইডব্লিউটিএ
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ইমিগ্রেশন পুলিশের আত্মহত্যা
প্রভাবশালীরা গিলে খাচ্ছেন হাওরের জমি, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
টঙ্গীতে দুই শিশুকে জবাই করে হত্যা

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close