ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রায় ৫০ বছর পর ১৫ কোটি টাকার অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার করেছে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
রোববার (১৬ মার্চ) উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের উচাখিলা বাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদুল আহমেদের তত্ত্বাবধানে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসাইন।
জানা গেছে, উপজেলার উচাখিলা বাজারের চৌরাস্তা এলাকায় সরকারি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকানসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের পুরাতন গো-হাটায় ৫৪ শতক জমি দীর্ঘ প্রায় ৪০-৫০ বছর যাবৎ অবৈধ দখলে ছিলো। গত শুক্রবার চিহ্নভূক্ত করে ৫৪ শতক জমি নির্ধারণ করা হয়।
রোববার অভিযানকালে উচাখিলার চৌরাস্তার মোড় কাঁচামাটিয় নদীর পাড়ে ৩০শতক সরকারি জমিতে অবৈধভাবে গড়েওঠা বিভিন্ন দোকানসহ প্রায় অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই সময় ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম সহযোগিতা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে উচাখিলা বাজারের ৭৬২ দাগের সরকারি ওই জায়গাটি দখল করে স্থায়ী ও অস্থায়ী অর্ধশতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করে প্রভাবশালী মহল। ওইসব স্থাপনায় দোকানপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা জামানত নিয়ে মাসিক ৩-১৫ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করে আসছে যুগের পর যুগ। অনেক দখলকারী সরকারি ওই জমিতে ঘর তৈরি করে বেঁচাকেনাও করেছে। ঈশ্বরগঞ্জ ভূমি অফিস থেকে জায়গাটি মেপে চিহ্নভুক্ত করে বার বার তাদের স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও দখলকারীরা কর্ণপাত করেনি। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোববার (১৬মার্চ ২০২৫) ওই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
উচ্ছেদকৃত জায়গার ফার্নিচার দোকানদার কাঞ্চন মন্ডল বলেন, আমি মালেক সরকারের কাছ থেকে দোকানটি ভাড়া নিয়েছি। শুনতেছি জায়গাটি সরকারের। ঈদ সামনে নিয়ে ভাংচুর করায় আমি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
উচ্ছেদকৃত জায়গার ঘর মালিক রাসেল মিয়া বলেন, আমি ও আমার চাচা আফাজ উদ্দিন প্রায় চল্লিশ বছর ধরে এই জমির ক্রয় সূত্রে মালিক। আমরা জমিটি জৈনক বছির উদ্দিনের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। আমাদের নামে বিআরএস ও রয়েছে। কিন্তু এসব আমলে না নিয়ে কোন প্রকার নোটিশ না করেই আমাদের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, উচাখিলা বাজারের নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকায় বেশকিছু দোকানপাট ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। পরবর্তীতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং জেল জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যেন এই জায়গা গুলোতে কোনোভাবেই আর অবৈধ দোকানপাট বসতে না পারে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) এরশাদুল আহমেদ বলেন, প্রায় ১৫ কোটি টাকার সরকারি জমি দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ দখলে ছিল। উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ইকবাল হোসাইনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার করা হয়।
কেকে/ এমএস