বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে আন্ধারী খালের উৎপত্তিস্থলে আন্ধারীর আগায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় কয়েক হাজার পাহাড়ী বাঙালি জনসাধারণের কৃষি-মৎস চাষসহ দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণের একমাত্র সুপেয় পানির প্রাকৃতিক উৎস আন্ধারী খাল। এ খালের পানি দূষণ, স্থানীয়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
পাশের মুরুং পাড়ার প্রধান কারবারী রুমতুই মুরুং বলেন, লামা রাবার এক হাজার ছয়শত একর জমি থাকতে আমাদের পাশে এসেই কেন ফ্যাক্টরি বানাতে হবে? এমনিতেই পাহাড়ে পানি সংকট তারা কি চায় আমরা সবাই চাষাবাদ করতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে যাই?
৮নং ওয়ার্ড এর সাবেক মেম্বার আব্দুল হালিম বলেন, লামা রাবারের উচিৎ অন্য স্থানে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা। না হলে রাবার ফ্যাক্টরির বর্জ মিশ্রিত খালের পানি দিয়ে প্রায় ৪০০ একর চাষাবাদ জমি ও দৈনন্দিন কাজে পানি ব্যবহার করলে মানুষ নানা রকম মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্তসহ পরিবেশ বিপর্যয় হবে। আমরা ২৫০-৩০০ পরিবারের মানুষ এই খালের পানির উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া বাংলাদেশের সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজের কয়েক হাজার শিশু কিশোরও এই পরিবেশ দূষণের শিকার হবে। কারণ এই ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হচ্ছে আবাসিক ও স্কুল ক্যাম্পাস এর খুব কাছেই।
এদিকে পাড়ার প্রধান কারবারী রুমতুই মুরুং এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ১৭ মার্চ সোমবার সকালে লামা প্রেস ক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাত করে লিখিত আবেদনে অনতিবিলম্বে রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি অন্যত্র স্থাপনের জোর দাবি জানান।
লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর ম্যানেজার মো.আরিফ হোসেন জানান, এখনো ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। আমরা পরিবেশ অধিদফতরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি, অনুমতি পেলে ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু করবো।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতর বান্দরবানের সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম জানান, লামা রাবার আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি সবদিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন জানান, পরিবেশের ক্ষতি এবং পানির উৎস নষ্ট হয় এমন কাজ করতে দেয়া হবে না। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এজে