নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাদিপুর ইউনিয়নে ৮ মাসের শিশু সন্তানের দুই হাত ও একটি পা ভেঙ্গে পালিয়েছে তারই গর্ভধারিণী মা।
রোববার (১৬ মার্চ) রাতে এ ব্যাপারে শিশুটির পিতা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের আন্দার মানিক গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আশরাফুলের সাথে জামপুর ইউনিয়নের শেখের হাট গ্রামের আবুল সরদারের মেয়ে সুরাইয়ার সাথে ৫ বছর আগে বিবাহ হয়। সংসার জীবনে সামির আহমেদ(৪) ও সিজান আহমেদ (৮ মাস) নামের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
গত ১৩ মার্চ ৮ মাসের সন্তান সিজান আহমেদের দুটি হাত ও বাম পা ভেঙ্গে বাপের বাড়ি পালিয়ে যায়। অসহ্য যন্ত্রনার কারণে শিশুটি দিনরাত ঘুমাতে পারছে না। মায়ের হাতে সন্তানের ওপর নির্মম নির্যাতন ও অমানবিক আচরণে বাকরুদ্ধ পুরো এলাকা। শিশুটির কান্না থামাতে আশপাশের নারী-পুরুষ ছুটে এলেও পিতার কোল ছাড়া কারো কাছেই থাকছে না।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অবুঝ শিশুটি হাতে পায়ে প্লাস্টার নিয়ে শুয়ে আছে। এসময় তার পিতা আশরাফুল অশ্রুসিক্ত চোখে সন্তানের পাশে বসে চোখের জল ফেলছেন।
সিজান আহমেদের পিতা আশরাফুল জানান, ছোটখাটো যেকোন বিষয় নিয়ে একটু তর্কবিতর্ক হলে তাকে মারতে দা-বটি নিয়ে কয়েকবার আক্রমণ করেছে এবং তার মাকেও মারধর করেছে। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলিনি। এখন দেখি সুযোগ পেলে আমার সন্তানদের মেরেও ফেলতে পারে। তাই আমাদের নিরাপত্তার জন্য গতকাল সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এসময় তিনি আরো জানান, রাতে প্রায়ই তার স্ত্রী ঘর থেকে বেরিয়ে কয়েক ঘন্টা পর ফিরে আসেন। ফিরে আসার পরই যেকোন অঘটন ঘটিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, স্ত্রীর পরকিয়ার কারণে আমি ও আমার সন্তানেরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
স্থানীয়রা জানায়, মেয়েটির আচরণ খুবই খারাপ। স্বামী ও শাশুড়ির সাথে অশ্লীল আচরণ নিত্যদিনের। কিন্ত ছোট সন্তানের হাত-পা ভেঙ্গে সে মা জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। বাচ্চার কান্নায় আমাদের চোখে এমনিতে কান্না চলে আসে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিম সরকার বলেন, শিশুটির বাবা আমার কাছে বিচার চাইতে এসেছিল। শিশুটির অবস্থা দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এমন মায়ের কথা জীবনে প্রথম শুনলাম। আমি তাকে থানা পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছি।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। শিশুটির প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
কেকে/এজে