জয়পুরহাটে ক্ষেতলালে চাঁদাবাজির মামলা নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে গতকাল রাতে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। একটি থানায় হামলা ও পুলিশকে আহত করার, অন্যটি চাঁদাবাজির মামলা। এ ঘটনায় পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার পাঁচজন হলেন দেলোয়ার হোসেন ওরফে বাবু (৪৭), মো. বিপ্লব হোসেন (২৪), মো. ফারুক হোসেন (৩২), উজ্জ্বল (৩৪) ও সজীব (২৮)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাত বছর আগে বগুড়ার শাহজাহানপুর এলাকার তোফাজ্জল হোসেন ক্ষেতলালের মিজানুর রহমানের কাছে জমি কেনেন। গতকাল ক্ষেতলাল সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে ওই জমির দলিল সম্পাদন করতে আসেন।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিকসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী সেখানে গিয়ে জমির ক্রেতার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। জমির ক্রেতা চাঁদা দিতে রাজি হননি। তখন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক ও তাঁর লোকজন দলিল সম্পাদন করতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। এ নিয়ে তোফাজ্জল ও তাঁর স্বজনদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের বাগবিদন্ডতা হয়। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা মেহেদী আশিক ও তাঁর লোকজ তোফাজ্জলের আত্মীয়দের বেধড়ক মারধর করে জখম করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ক্ষেতলাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গতকাল তোফাজ্জলের স্ত্রী জয়নব বেগম থানায় মামলা করতে যান। এ খবর পেয়ে ইফতারের আগমুহূর্তে বিএনপি নেতা মেহেদী আশিক তাঁর দলবল নিয়ে থানায় গিয়ে হামলা করেন। তাদের বাঁধা দিতে গিয়ে থানার কনস্টেবল কাজী জাফর আহত হন। পরে সেনাবাহিনী ও কালাই থানার পুলিশ সেখানে এসে লাঠিপেটা করে লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে তিনজন ও পরে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি হামলার সাথে জড়িত নয়। খবর পেয়ে আমি তাদের বিতারিত করতে এসে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের শিকার হই। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সত্য ঘটনায় তুলে ধরবেন।
মুঠোফোন বন্ধ থাকায় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যে কেউ হোক যে অপরাধ করবে তার বিচার হবে।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, তোফাজ্জলের স্ত্রী জয়নব বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করেছেন। থানায় হামলা ও পুলিশকে আহত করার ঘটনায় থানার এসআই সঞ্চয় কুমার বর্মণ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
কেকে/এআর