নীলফামারীতে সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সদ্য ঘোষিত ১১ সদস্যের কমিটিকে অবৈধ দাবি করে ওই কমিটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে মালিক গ্রুপের একাংশ।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকালে জলঢাকা বাস টার্মিনালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানানো হয়। দ্রুত ওই কমিটি প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারী প্রদান করা হয় এসময়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পূর্বের কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেড। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওই কমিটির সহসভাপতি মোফাখাখারুল ইসলাম সঙ্গী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মিঠুন, সড়ক সম্পাদক রাশেদুজ্জামান মিল্টন প্রমুখ।
সংবাদ সমম্মেলনে দাবি করা হয় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেল বছরের ২৬ আগস্ট নির্বাচনী তফশীল ঘোষণার মাধ্যমে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ত্রি-বার্ষিক কমিটি গঠিত হয়। এতে অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সোয়েম নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বৈধ ওই কমিটি দায়িত্ব পালন করেছে মাত্র ছয় মাস।
এরই মধ্যে কমিটির সভাপতি আরেফ রব্বানী মানিক স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করেন। সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে নিজের ইচ্ছামত কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। অনৈতিক প্রস্তাব, অবাঞ্চিত চাঁদা উত্তোলন, কাউন্টার দখল, সাধারণ মালিকদের পরিবহণ বন্ধের হুমকী, অন্যায়ভাবে অর্থদাবী করতে থাকেন।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে নির্বাচিত ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তারিকুল ইসলাম, সহসভাপতি মোফাখাখারুল ইসলাম সঙ্গী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মিঠুন, সড়ক সম্পাদক রাশেদুজ্জামান মিল্টন ও সহসাধারণ সম্পাদক ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেডকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থীভাবে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রেরণসহ সংগঠন থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। যা সভাপতি আরেফ রব্বানী মানিকের এখতিয়ার নেই। এ ঘটনার কয়েকদিন পর গত ১৭ মার্চ নিয়ম বর্হিভুতভাবে ১১ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেন তিনি।
ফাহমিদ ফায়সাল কমেড অভিযোগ করে বলেন, সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খানের দোসরদের নিয়ে পরিবহণ সেক্টরে অস্থিরতা এবং অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছেন আরেফ রব্বানী মানিক। তিনি নিজেও সে সময়ে শাহজাহান খানের সাথে মিলেমিশে কাজ করেছেন। আমাদেরকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের কমিটিতে রয়েছেন এমন লোকদের সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের ১১ সদস্যের ওই অবৈধ কমিটিতে জায়গা করে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে সভাপতি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসনের কাজ করছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মিঠুন অভিযোগ করে বলেন, গত ১৭ মার্চ ইফতার মাহফিলের দাওয়াতকে বিষেশ সাধারণ সভা দেখিয়েছেন সভাপতি। ওই অনুষ্ঠানে পরিবহন মালিকদের তেমন উপস্থিতি ছিল না। বেশিরভাগ উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। সেটিকে সভা দেখিয়ে অবৈধ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১১ সদস্যের ওই কমিটিতে আরেফ রব্বানী মানিককে পুণরায় সভাপতি ও আবুল হাসনাত রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক দেখানো হয়েছে। এভাবে কমিটি ঘোষণা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘোষণা দিচ্ছি যদি অবৈধ এই কমিটি বাতিল করা বা প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে’।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সভাপতি আরেফ রব্বানী মানিক বলেন, সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। তারা যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তা সঠিক নয়। পরবর্তী কমিটি নিয়ম মেনে করা হয়েছে।
কেকে/এজে