চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব বিরোধ ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রমজান আলী (২২) নামে এক যুবদল কর্মী প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে ভূজপুর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাত ৯টায় উপজেলার উত্তর ফটিকছড়ির শান্তিরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রমজান দাঁতমারা ইউনিয়নের পুর্ব তারাখোঁর বাসিন্দা মৃত মোহাম্মদ হানিফের পুত্র। সে পেশায় একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও যুবদল কর্মী।
এ ঘটনায় একই ইউনিয়নের মনোয়ারখিল এলাকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মো. হাসান নিজামী (২৩) চুরামনি এলাকার মানিক মিস্ত্রির পুত্র মো. সোহেল নামে দুইজন আহত হয়৷ আহতদের মধ্যে হাসান নিজামীসহ ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল আলমের ছেলে মহিমদ্দিন (১৮), বদিউল আলমের ছেলে ফোরকান (২০), জয়নাল আবেদিনের ছেলে পেয়ার আহমদকে (২৭) গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত রমজান আলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহারের সমর্থক যুবদল কর্মী আহমদ ছাফার অনুসারী। পক্ষান্তরে হামলাকারীরা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীরের কর্মী একরামুল হক একরামের অনুসারী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, যুবদলকর্মী আহমদ ছাফা ও রমজান আলী মোটরসাইকেল যোগে শান্তিরহাট বাজারে আসছিল। প্রতিমধ্যে ওতপেতে থাকা প্রতিপক্ষের ৪/৫ যুবক আহমদ ছাফার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে হামলা চালায়।
এ সময় প্রাণ বাঁচাতে রমজান দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধরে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। এতে রমজান ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে মৃত্যুর বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় যুবদল কর্মী আহমদ ছাফা বলেন, শান্তিরহাটবাজার থেকে রমজানকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলাম। প্রতিমধ্যে পথরোধ করে একরামের কর্মী হাসান ও সোহেলের নেতৃত্বে ৪/৫ জন যুবক আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি দৌঁড়ে পালাতে পারলেও রমজানকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। একরামের লোকজন এর আগেও আমাদের কর্মী সমর্থকদের বিভিন্নভাবে হামলা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার ও রাজনৈতিক সুরাহা চাই।
প্রতিপক্ষের বিএনপি নেতা একরামুল হক একরাম বলেন, কোনো মৃত্যুই কাম্য নয়। আহমদ ছাফা হাসানের মোটরসাইকেল ছিনতাই করেছে। সেই মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে গিয়ে মারামারির ঘটনায় রমজানের মৃত্যু হয়েছে।
একরাম বলেন, আহমদ ছাফা সম্প্রতি আরও ২/৩টি মারামারিসহ হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।
এদিকে নিহতের ভাই মো. আরমান (বাদশা) বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনা চারজনকে গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করে ভূজপুর থানার ওসি মো. মাহবুবুল হক বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ছয়জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছে। বাকি আসামিদের ধরার ব্যাপারে প্রসাশন কাজ করছে।
কেকে/এএম