জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। হামলায় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের, এসএটিভির সাংবাদিক হাসান আল সাকিব এবং পার্টির চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী মিলনসহ আরো কয়েকজন গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত সাংবাদিক হাসান আল সাকিবকে তার সহকর্মীরা দ্রুত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। এ ছাড়াও এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিকের মোবাইল ভেঙে ফেলেছে হামলাকারীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) ইব্রাহীমপুরে ‘দ্য বুফে প্যালেস’-এ অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু উপস্থিত ছিলেন।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া আহত সাংবাদিক হাসান আল সাকিব বলেন, জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের অনুষ্ঠানে হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিছু টোকাইটাইপের দুষ্কৃতকারী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। আমার মাইক্রোফোন, ডিভাইস, মোবাইল সব কেড়ে নিয়ে মাথায় স্টিক জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। কিছু বোঝার আগে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি লাইভে ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুইজন ছেলে আমার ফোনটি কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে এবং আমার সহকর্মীকে মারধর করে।
এদিকে হামলার বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানান, বিকালে কচুক্ষেত সংলগ্ন দ্য বুফে প্যালেসে এই ইফতার মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ২০-২৫ জন ইফতার মাহফিলের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। এ সময় জাতীয় পার্টি নেতাকর্মী ও স্থানীয় রোজাদারদের প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা হল থেকে বের হয়ে যায়। এর প্রায় ১০ মিনিট পরে সন্ত্রাসী গ্রুপটি শতাধিক সন্ত্রাসীদের নিয়ে ক্রিকেট ব্যাট, হকিস্টিক, লাঠিসোঁঠা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মী, স্থানীয় রোজাদার, সাংবাদিক ও পথচারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।
হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলসহ কমপক্ষে ২০টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ইফতারের আগ মুহূর্তে সেনাবাহিনী সদস্যরা এসে সন্ত্রাসীদের ওপরে ব্যাপক লাঠিচার্জ চালিয়ে হটিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনীর দেওয়া নিরাপত্তায় জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে গত ৮ মার্চ পল্লবী থানার ২ নম্বর কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টির আরেকটি ইফতার মাহফিলে হামলা হয়েছিল, যা পরে ভণ্ডুল হয়ে যায়। হামলাকারীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্লোগান দিয়ে ইফতার মাহফিল বন্ধ করে দেয়।
কেকে/এমএস/এএম