অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পচা-বাসি খাবার পরিবেশন, পোকা খাওয়া সবজি, খাবারে পোকামাকড়, প্লেট অপরিচ্ছন্ন ও পুরাতন প্লাস্টিকের বোতলে পানি সরবরাসহ ডজন খানেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদারের বিরুদ্ধে। এবার শিক্ষার্থীদের পর ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। সাতদিনের মধ্যে সন্তোষজনক খাবার পরিবেশন করতে না পারলে বিদায়ের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন এ পরিচালককে।
আজ বুধবার সকালে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান যাচাই-বাছাই করতে এসে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
খাবারের মান যাচাই-বাছাই করার পর ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদারকে উদ্দেশ্য করে উপাচার্য বলেন, ‘হুট করে আমি দুপুর বা রাতে খেতে আসবো, এটাই স্বাভাবিক। খাবারের মান উন্নয়নের জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু খাবারের মানের কোনো পরিবর্তন নাই। এখন মনে হচ্ছে আপনার বিদায়ের ঘণ্টা বাজতে চলেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আসাতে পরোটার সাইজ দিগুণ হয়ে গেছে, শিক্ষার্থীদেরকে কি আপনি মানুষ মনে করেন না? ১০ জনের জায়গায় তিনজন দিয়ে চালাচ্ছেন- আর কত টাকা বাচাবেন?
এসময় তিনি ক্যাফেটেরিয়ার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাতদিনের মধ্যে সন্তোষজনক খাবার পরিবেশন করতে না পারলে বিদায়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার হুশিয়ারি দেন মান্নুকে।
এসময় উপাচার্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম।
খাবারের মানের পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে মান্নু মজুমদার বলেন, স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি সব কিছু পরিচালনা করার চেষ্টা করবো। খাবারের মানের ব্যাপারে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এবং শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি। তারা যদি আমাকে সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে দেয়, তাহলে আমি সেটা সমাধানের ব্যবস্থা নিবো।
নিম্নমানের খাবার পরিবেশন নিয়ে বাংলা বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আতিক হাসান অন্তর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। অনেক শিক্ষার্থী খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছে এবং পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের দাবি জানিয়ে আসছে। আমরা চাই ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে নতুন কাউকে আনা হোক এবং খাবারের মান উন্নত ও সুলভ মূল্য নিশ্চিত করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, প্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পর উপাচার্যের নির্দেশে ক্যাফেটেরিয়ার দিকে নজর দিয়েছি। ক্যাফেটেরিয়া ম্যানেজারের সাথে অফিসিয়ালি কথা বলেছি এবং খাবারের মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের মতামত সংগ্রহ করেছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপাচার্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
কেকে/এমআই