সময়ের ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু। কিন্তু ইতিহাসের এক অবিচল প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাজালের কান্দী ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ। শত বছর আগে নির্মিত এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি আজও ইসলামের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে টিকে আছে; যেখানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মিশে আছে স্থাপত্যশৈলীর অতুলনীয় সৌন্দর্য।
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের সাজালেরকান্দী গ্রামে ভূঁইয়া বাড়ির মৃত হাজী কুদরত আলী এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখনকার সময়ের তুলনায় এর স্থাপত্যশৈলী ছিল অত্যন্ত দৃঢ় ও সুদৃশ্য। মসজিদের প্রতিটি দেওয়ালের পুরুত্ব ৬-৮ ফুট, যা প্রমাণ করে এর স্থায়িত্ব ও শক্তিশালী নির্মাণশৈলী। এমন পুরু দেওয়াল সাধারণত রাজপ্রাসাদ বা দুর্গে দেখা যায়, যা এ মসজিদটির স্থাপত্যশৈলীতে রাজকীয় ছোঁয়া যোগ করেছে।
শুরুতে মসজিদে এক কাতারে ১৬ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। তবে স্থানীয়দের ব্যবস্থাপনায় প্রায় ১০ বছর আগে সম্প্রসারণ করায় এখন সেখানে একসঙ্গে ২০০-২৫০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মসজিদের ফ্লোরে সংস্কার ও টাইলস সংযোজন করা হয়েছে, যা একে আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করেছে। এই ঐতিহাসিক মসজিদটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর তিনটি গম্বুজ।
বর্তমান মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন ভূঁইয়া খোলা কাগজকে জানান, এই তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট মসজিদটি অনেকেই দেখতে আসেন। মৃত হাজী কৃতরত আলী ভূঁইয়া এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে।
সাজালেরকান্দী ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় সৌন্দর্যের প্রতীক। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করছেন, আরবের সেই প্রাচীন ইসলামী স্থাপত্যের ছোঁয়া অনুভব করছেন।
সাজালেরকান্দী ৩ গম্বুজ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খোলা কাগজকে বলেন, প্রতিদিনই অনেকে মসজিদটি দেখতে আসেন। বিশেষ করে শুক্রবার অনেক দূরের মানুষও এখানে নামাজ পড়তে আসেন। আমরা চেষ্টা করি মসজিদের সৌন্দর্য যেন নষ্ট না হয়। এই মসজিদে আমি ১৫ বছর ইমামতি করছি। এই মসজিদে আমারা আব্বা ও দাদা ইমামতি করে গেছেন।
মৃত কুদরত আলী ভূঁইয়ার নাতী এই মসজিদের ক্যাশিয়ার মোহাম্মদ বদিরউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, প্রায় শতবছরের প্রাচীন মসজিদটি শুধু অতীতের গৌরব নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অনন্য ইতিহাসের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। ইসলামিক ঐতিহ্যের এমন নিদর্শন সংরক্ষণ ও উন্নয়নে এটি আরও বহু শতাব্দী ধরে ইসলামের আলো ছড়িয়ে যেতে পারে।এই মসজিদটি উদ্ধোধনের পর থেকে প্রথম অল্প মুসল্লি ছিলো এখনো ২০০-২৫০ লোক নামাজ পড়ি। এখন এটা বৃহত্তর আকার হয়ছে। আমার দাদা ছিলো তৎকালীন জমিদার আমার দাদার পরিকল্পনায় তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট মসজিদটি তৈরি করা হয়ছে।
সরকারি তোলারাম কলেজের মাষ্টার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন মিয়া বলেন, এই মসজিদটি অনেক ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদ। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি সাজালের কান্দী গ্রামে আমরা দেখে আসি। প্রতিদিন এখানে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে।
কেকে/এজে