নারায়ণগঞ্জের শিল্প নগরী উপজেলা রূপগঞ্জের সীমানা দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট ও চট্রগ্রাম বিভাগীয় জেলাগুলোর রাজধানীতে প্রবেশ পথ ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা বাইপাসের চিরচেনা যানজট নিরসনের ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন রূপগঞ্জ ইউএনও সাইফুল ইসলাম। সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদ, হাইওয়ে পুলিশকে সহায়তায় অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ আর অবৈধ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়মিত টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন তিনি। তবে একটি অবৈধ দখলদার হকার সিন্ডিকেটে পুরোপুরি সরানো, গোলাকান্দাইল মোড়ে স্থায়ী ড্যাম্পিং স্টেশন না থাকায় সড়ককে ময়লার ভাগার করার এ উদ্যোগ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ঢাকা বাইপাস সড়কের ভুলতা ফ্লাইওভার,গোলাকান্দাইল মোড়, রূপসী মোড়, তারাবো বিশ্বরোড আর ঢাকা বাইপাসের মায়ারবাড়ি, চান টেক্সটাইল মোড়, ডেমরা কালীগঞ্জ সড়কের মুশুরী ফজুর বাড়ি মোড়, দড়িকান্দি সেতু, ইছাখালী মোড়, হাবিবনগরসহ বিভিন্ন স্পটে যানজটের কবলে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাতায়াতকারী পথচারী ও যাত্রীসাধারণ। ভুলত ফ্লাইওভারের নিচের প্রায় পুরো সড়ক দখল করেই হকাররা বসিয়েছেন পসরা। এসব সকালে উচ্ছেদ করলে বিকালে রহস্যজনক বসে যায়। এতে এ অঞ্চলের চিরচেনা যানজটে নাকাল সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা।
সূত্র জানায়, ঢাকা সিলেট মহাসড়কেরর ভুলতা ফ্লাইওভার অঞ্চলে রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রয়েছেন রূপগঞ্জ থানার অধীনের বেশ কিছু সদস্যরা। পাশাপাশি রয়েছে গাজীপুর রিজোনাল হাইওয়ে পুলিশের আওতায় ক্যাম্প। যেখান থেকে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কাউকে কাজ করতে দেখা যায়নি। যদিও ঢাকা বাইপাস সড়কের কাঞ্চনসেতু এলাকার ট্রাফিকের কতিপয় সদস্য এ সড়কের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন।
এদিকে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে কোন প্রকার যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে কোন সংস্থা নেই। ফলে ডেমরা- কালীগঞ্জ সড়কের পূর্বাচল নতুন শহর থেকে দড়িকান্দি সেতু পর্যন্ত নির্মানাধীন অংশ থানা ভবন সংলগ্ন মুশুরীতে যানজট থাকে নিত্য। এতে চরম ভোগান্তি পোহান এ সড়কের চলাচলকারীরা৷ আবার রূপসী কাঞ্চন সড়কের হাটাবো থেকে কালাদী পর্যন্ত একইভাবে যানজট থাকায় পুরো রূপগঞ্জেই যানজট ভোগান্তি চরমে।
এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয়দের দাবীর মুখে ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। নিয়মিত টহল আর বিভিন্ন স্পটে অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করায় যানজট পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে বেশ কিছু এলাকায়। যদিও নির্মাণাধীন সড়কে বিদ্যুৎ খুটি জটিলতায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি।
দায়িত্বরত শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবকদের দাবী, ভুলতার যানজট কমাতে সড়ক উদ্ধার জরুরি। প্রশাসন অভিযান করলেও তা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মানে না। আবার নানা কর্মকর্তা পরিচয়ে আইন ভঙ্গ করতে দেখি।
ভুলতা হাইওয়ে থানার দায়িত্বরত সহকারী উপ পরিদর্শক রুবেল মিয়া বলেন, যানজট নিরসনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি, ছাত্ররা থাকাতে আরও সহজ হচ্ছে। তবে ইদানীং আইন না মানার প্রবণতা বেশি থাকায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, রূপগঞ্জে প্রায় ১০ লাখ লোকের বসবাস। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক এ অঞ্চল দিয়ে চলে গেছে। ঢাকা বাইপাস সড়ক ও অভন্তরীণ সড়কগুলোতে একদিকে নির্মাণাধীন অন্যদিকে নানা জটিলায় পুরোপুরি যানজট কমানো যায়নি। তবে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের পর পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়েছে। এটাকে স্থায়ী করতে পারলে সমস্যার সমাধান হবে।
কেকে/ এমএস