লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের আওতায় খামার পরিচর্যা সামগ্রী বিতরণ না করে নিজ দপ্তরে ফিরে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান। পরে ওইসব উপকরণ গোডাউনে নিয়ে যান সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান খামারীদের পরিচর্যা সামগ্রী বিতরণ স্থগিত করেন।
তবে ইউএনও আসার আগেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোতাহারুল ইসলাম একক ভাবে ৩৫ জনকে খামার পরিচর্যা সামগ্রী দিয়ে বিদায় করে দেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে ২০১৯ সালের বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সুবিধা ভোগী উপজেলার দু'টি ইউনিয়নের ৬৭ জনকে খামারী হিসাবে তালিকা ভুক্ত করা হয়। ওই ৬৭ জন প্রায় ৭ বছর থেকে প্রাণী সম্পদ বিভাগের যোগসাজসে এতদিন গরু মোটাতাজাকরণের নামে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) তালিকা ভুক্ত ওই দু'টি দলের ৬৭ জন খামারীকে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য ১টা ট্রলি ১টা বেলচা ১টা ওয়াটার পাম্প এবং দুইটা রাবার ম্যাট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডা. মোতাহারুল ইসলাম। ৬৭জনের ওই দু'টি দলের একটি পাটগ্রাম ইউনিয়নের ব্যাংকান্দা মৌজায় এবং অপরটি বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর মৌজায়। ওই দু'টি দলের ব্যাংকান্দা দলে ৩৫ জন এবং নবীনগর দলে রয়েছে ৩২ জন তালিকা ভুক্ত সদস্য। ২০১৯ সালের পতিত সরকারের তালিকা ভুক্ত ওই সদস্যদের মধ্যে বেংকান্দা দলকে বুধবার (১৯ মার্চ) প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোতাহারুল ইসলাম কাউকে না জানিয়ে একাই গরু মোটাতাজাকরণের পরিচর্যা সামগ্রী দিয়ে দেন।
পরে ইউএনও জিল্লুর রহমান পরিচর্যা সামগ্রী খামারীদের মধ্যে উদ্বোধন করার জন্য প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে গিয়ে নানা অসংগতি ও তার অনুপস্থিতিতে ব্যাংকান্দা দলের মধ্যে পরিচর্যা সামগ্রী বিতরণের খবর জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে তিনি বাউরা নবীনগর দলের নিকট উপকরণ বিতরণ না করে তার কার্যালয়ে চলে যান।
এ সময় খামারী পরিচয় দেয়া দুলাল জানান, তার খামারে বর্তমানে একটি গরু আছে। একটি গরু দিয়ে তিনি কীভাবে খামার মালিক হন জানতে চাইলে, সদুত্তর মেলেনি। দুলালের মত অনেকে আছে যাদের কোন পশু নেই অথবা একটি বা দুটি দেশি জাতের ছোট গরু আছে তবুও তিনি খামারী হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে অবৈধ ভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তন হলেও এরা এখনও আগের মতই সেই একই সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে আসছেন। ডা. মোতাহারুল ইসলাম অত্যন্ত গর্বের সাথে বলেন এর আগে খামারীরা চপার মেশিন পেয়েছে এর পরে তারা চেয়ার টেবিল পাবেন।
এ সময় উপস্থিত সংবাদকর্মীরা ডা. মোতাহারুলের কাছে উপকরণ সামগ্রীর সিডিউল দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে ব্যর্থ হয়ে বলেন, আমাদের যা সরবরাহ করা হয়েছে আমরা তাই খামারীদের দিচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কেকে/এআর