বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা নতুন কিছু নয়। দেখেন কত সহজেই প্রথম বাক্যটা লিখে ফেললাম। এমন একটা ব্যাপার, যেন সাংবাদিকদের মারাটা জায়েজ। সাগর-রুনির হত্যা মামলা নিয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। আর পথে-ঘাটে সাংবাদিকদের মেরে রক্তাক্ত করা তো তেমন কোনো ব্যাপারই না। তার কাজ ভালো না লাগলেই চড়-থাপ্পড় মেরে দেওয়া হয়। এমন একটা ভাব যেন, তারা শুধু মাইর খাওয়ার জন্যই রাস্তায় বের হয়।
১৯ মার্চ এসএ টিভির রিপোর্টার মো. হাসান আল সাকিবের ওপর হামলা করা হয়েছে। কচুক্ষেতে। কিন্তু এখনো কি কেউ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বা এসএ টিভি কি এখনো মামলা করেছে? আমরা জানি না। কিন্তু আমরা তো চাই, সাংবাদিকরা নিরাপদ জীবনযাপন করুক। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। তারা পদে পদে বাধার মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের কাজ করতে দিচ্ছে না একটা গোষ্ঠী। নানাভাবে তাদের হেনস্তাও করা হয়।
আমাদের দেশে সুস্থ ধারার সাংবাদিকতা নেই বললেই চলে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোরও দায় আছে। আবার দেখা যায় অনেক সাংবাদিক অনৈতিক কাজের সঙ্গেও যুক্ত হয়। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের এত কম বেতন দেয়, যা দিয়ে সংসার চালানো দূরে থাক, নিজেই ঠিকভাবে চলতে পারে না। সেজন্যই অনেকেই অন্যায়ের পথে হেঁটে যায়।
দেখা যায়, অনেকেই বেতন পায় ২০ হাজার। কিন্তু নতুন নতুন বাইক কিনছে, দামি রেস্টুরেন্টে খাচ্ছে। এগুলো কীভাবে হয়? নিশ্চয়ই অনৈতিক কাজেরই ফল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো যদি তাদের বেতন কাঠামো বা ওয়েজবোর্ড মানত, তাহলে কোনো সাংবাদিকেরই অনৈতিক পথে যাওয়ার প্রয়োজন হতো না। অনেককেই বলতে শোনা যায়, ওই লোক তো দুই টাকার সাংবাদিক।
সাংবাদিকদের নামে এমন কথা কেউ বলতে পারে, তা শুনে আমাদের মন খারাপ হয় কিংবা রাগও হয়। কিন্তু যদি আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে না পারি তাহলে এটি চলতেই থাকবে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলা কেন হয়, মানুষ কেন সাহস করে, এত সাহস তারা কোথায় পায়? সাংবাদিকদের নামে অপপ্রচারও কম হয় না। নানাভাবেই আজ সাংবাদিকরা হেনস্তার স্বীকার হচ্ছে। এসব কবে বন্ধ হবে? সরকার থেকে কেন এসব বিষয়ে আইন করা হচ্ছে না। আর কতদিন সাংবাদিকরা এভাবে চলবে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে?
কেকে/এএম