কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার ১ নং জিনারী ইউনিয়নে অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বরাদ্দকৃত ঈদুল ফিতরের উপহার (ভিজিএফ) চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম রহিদের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হোসেনপুর উপজেলার ১নং জিনারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চাল বিতরণে এ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
উপকারভোগীর অভিযোগ, ১০ কেজির জায়গায় ৮ কেজি থেকে সাড়ে ৮ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। আর এ কাজ করা হয়েছে হোসেনপুর উপজেলার ১ নং জিনারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কথায়। ফলে সরকারি বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত অতিদরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থ পরিবার।
দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১নং জিনারী ইউনিয়নে চাল নিতে আসা উপকারভোগীর দীর্ঘ লাইন। হাতে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরযুক্ত কার্ড। পরিষদের চাল দেবার ঘরে দেখা যায় কয়েকজন ব্যক্তি বালতি দিয়ে চাল বিতরণ করছে। এতে ১০ কেজি চালের মধ্যে ৮ কেজি থেকে ৯ কেজির মতো চাল বিতরণ করা হয়েছে। কম দেওয়ার কথা বলতেই তারা সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকেন এবং কম দেওয়ার কথা ইউএনও কে জিজ্ঞেস করতে বলেন।
জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সারাদেশে ১০ (দশ) কেজি হারে বিনামূল্যে ভিজিএফ খাদ্যশস্য (চাল) বিতরণ করার কথা। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে হোসেনপুর উপজেলার ১নং জিনারী ইউনিয়নের ৩ হাজার উপকারভোগীদের মধ্যে ১০ কেজি হারে চাল বিতরণ করার কথা থাকলেও ৮ কেজি থেকে সাড়ে ৮ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। এসব কার্ড বিতরণে চেয়ারম্যান স্বজনপ্রীতি করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি অনুমোদিত ১০ কেজি চালের কম অর্থাৎ ৮ কেজি থেকে সাড়ে ৮ কেজি করে দিচ্ছে। যারা স্বাবলম্বী তাদের চাল নেওয়ার দরকার নেই তারা কার্ডের মাধ্যমে চাল নিচ্ছে। মেম্বার- চেয়ারম্যানরা অনেককে একাধিক কার্ড দেন। পরে তারা সে চাল নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ করেন।’
কার্ডধারী চাল নিতে আসা ব্যক্তিরা জানান, ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে আট থেকে নয় কেজি করে চাল দিচ্ছে চেয়ারম্যান।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. নজরুল ইসলাম জানান, চাল দেওয়া শুরু থেকে আমরা ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি করে কম দেওয়া হয়। এখন বেশি কম দেয়া হচ্ছে এ ব্যাপারে আমি কোন কিছু জানিনা। আমি শুধু কার্ড দেখে আঙ্গুলের ছাপ নেই।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম রহিদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, চাল কম হতে পারে তবে বেশি কম হওয়ার কথা না। ইউএনও স্যার আমাকে ৯ কেজি করে দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে চাল আট থেকে সাড়ে আট কেজি দেওয়ার কথাটা মিথ্যা ৯ কেজি করে চাউল দেওয়া হচ্ছে। একজনের কাছে একাধিক কার্ড এমন প্রশ্নের কোন সদ উত্তর দিতে পারেনি।
জিনারী ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার মো. এহসানুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান সকালে সঠিক ভাবেই চাল দিয়েছে আমি একটু কাজে চলে আসছি শহরে। ট্যাগ অফিসার উপস্থিত নেই কেনো এমন প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন পরে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাহিদ ইভার সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, চাল কম দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। যদি এমন অভিযোগ আসে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ এমএস