যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ৫৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৯.৩০ টায় ভাইস চ্যান্সেলর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। সকাল ৯.৫০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর শহিদগণের স্মৃতির প্রতি পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. শামসুজ্জোহা এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. এস. এম. এমদাদুল হাসান। ক্রমান্বয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক-কর্মকর্তাগণের বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সকাল ১০ টায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ভাইস চ্যান্সেলরের বাণী বিতরণ ও পাঠ করা হয়। বাণীতে প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা বলেন, আমি ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষক, সেক্টর কমান্ডার, খেতাবপ্রাপ্ত বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম ও বীরপ্রতিকবৃন্দকে যাঁদের সাহসিকতা, বিচক্ষণতা ও সময়োপযোগী বীরচিত রণকৌশলের মাধ্যমে জাতি হানাদারদের বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
তিনি আরো বলেন, মহান স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা দেখলাম দেশ ও জাতির শত্রুরা আবারও স্বাধীনতার মূল অর্জনকে বাঁধাগ্রস্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এক যুগেরও বেশী সময় ধরে একই কায়দায় দেশের জনগণের উপর জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন ও শোষণ শুরু করে ফলশ্রুতিতে, এদেশের আপামর জনতা একাত্তরে যেভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র পাক্ হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল ঠিক একই চেতনা ধারণ করে বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ’২৪ এর জুলাই-আগষ্ট এ নিরস্ত্র শান্তিকামী ছাত্র-জনতা গড়ে তোলেন গণআন্দোলন ও গণবিপ্লব। শহিদ হন আবু সাঈদ-মুগ্ধ-রাহুলসহ শত শত তরতাজা শিশু-কিশোর, ছাত্র-যুবক-শ্রমিক। হাজার হাজার ছাত্র জনতা চিরতরে অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্ববরণ করেন এবং স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট সরকারকে হটিয়ে ছিনিয়ে আনে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। তাই, শহিদদের আদর্শে উজ্জিবিত হয়ে আভ্যন্তরিণ ও বৈশ্বিক নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, কল্যাণকর, আত্মমর্যাদাশীল, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্বনিভর্র বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় শপথ গ্রহণ করি।
বাণী পাঠ শেষে টিএসসি প্রাঙ্গণে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে সকল প্রতিযোগিতাসমূহের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বাদ জোহর শহিদগণের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি ২৬ মার্চ ২০২৫ খ্রি. তারিখ সুর্যাস্তের পর থেকে ২৭ মার্চ ২০২৫ খ্রি. তারিখ সুর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইট, প্রশাসনিক ভবন, শহিদ মিনার ও টিএসসি তে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়।
কেকে/ এমএস