বান্দরবানের লামা উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জায়গা জবর দখল, পাহাড় ও গাছ কেটে কটেজ নির্মাণের অভিযোগে উপজেলা কৃষকলীগ নেতাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) লামা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ সমন জারি করেন।
সমন প্রাপ্তরা হলেন-কৃষক লীগ নেতা মো. সুলতান (৪২), ডেনিয়েল স্রো (৩৮), সামুয়েল স্রো (৪০), রিংরাও স্রো (৪২), রুবেল ত্রিপুরা (৩৮), চৌধুরী মো. সুমন (৩৫), রাসেল চৌধুরী (৩২), সুভাষ ত্রিপুরা (৪৫), রুহুল আমিন (২৬), নুরুল আলম (২৮), মিজবাউল হক ছোটন (৩০), মো সোহেল (৩০), আরাফাত হোসেন বুলবুল (৩০)। এরা সবাই লামা পৌরসভা ও লামা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা। দুলাল মিয়া লামা পৌরসভা এলাকার বাজার পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে।
অভিযোগে জানা যায়, দুলাল মিয়া ও তার বাবা নুরুল ইসলামের নামে উপজেলার ২৯৩নং ছাগল খাইয়া মৌজার আর ২৬৭নং হোল্ডিং মূলে ৫ একর ও আর ১৩১নং হোল্ডিং মূলে ৫ একর তৃতীয় শ্রেণির জায়গা রয়েছে।
১৯৮০-৮১ সাল থেঝে এ জায়গায় ফলদ বনজ গাছের বাগান সৃজন করে ভোগ করে আসছিলেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় সম্প্রতি এ জায়গার ওপর বিবাদীদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা বিভিন্ন সময় এ জায়গা অবৈধভাবে গ্রাস করার পরিকল্পনা করে। এ ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে বিবাদীরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুলাল মিয়ার ভোগদখলীয় জায়গার ওপর নির্মিত খামার ঘর ভাঙচুর করে। দুলাল মিয়া ও তার স্বজনেরা খামার বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা জায়গা তাদের দাবি করে হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় বান্দরবান সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মোকদ্দমা নং ১২৫/২০২৪ দায়ের করেন ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া। এ মোকদ্দমার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীয় জায়গায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।
এতে বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে বিবাদীরা আবারো সংঘবদ্ধ হয়ে পাহাড় কেটে ও ২০-৩০টি সেগুন গাছ কেটে ছোট ছোট জুমঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করে। এতেও প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজনদেরও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন।
এসব ঘটনায় পুলিশ কর্তৃক তদন্তসাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে এ ঘটনার ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ (সি আর ১২২/২৫) করেন ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া। বিবাদীদের প্রতি সমন জারির সত্যতা নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী রাজিব চন্দ্র দেব বলেন, বিবাদী কর্তৃক বাদী দুলাল মিয়ার জমি জবর দখল চেষ্টাসহ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ, পাহাড় ও গাছকাটা, গুম ও প্রাণ নাশের হুমকি অভিযোগ সরাসরি আমলে নেন বিজ্ঞ আদালত।
কেকে/এএস