নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুরুল মহসাড়কের হরিণচড়া নির্জন এলাকায় পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে চাচা ভাতিজাকে হত্যার ঘটনার সুষ্ট তদন্ত ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা ১০ নম্বর ব্রীজ এলাকায় ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ। নিহত রোকনুজ্জামান (৩১) তাড়াশের হিমনগর গ্রামের আজিজ ফারুকীর ছেলে ও নাসির উদ্দিন (৪০) একই এলাকার মৃত-শফিকুল ইসলামের ছেলে।
মানববন্ধনে রোকনুজ্জামানের ভাই শাওন ফারুকী বলেন,“ গত ২৪ মার্চ নিজ বাড়ি থেকে ভাতিজা নাসির উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ছোট ভাই রোকনুজ্জামান মোটরসাইকেল যোগে সিরাজগঞ্জ কোর্টে হাজিরা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। কাছিকাটা হয়ে বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়ক বেয়ে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলো তারা। ৯ নম্বর ব্রীজ এলাকা থেকেই একটি অজ্ঞাত হাইয়েচ গাড়ি মোটরসাইকেলেরে পেছনে ছুটে যাচ্ছিলো। মহাসড়কের হরিণচড়া এলাকার একটি নির্জন স্থানে পৌছালে আচমকা হাইয়েচ গাড়ি গতি বাড়িয়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই আমার ছোট ভাই মৃত্যু বরণ করেন। একদিন পর গুরুত্বর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ভাতিজা নাসির উদ্দিনও মৃত্যু বরণ করে। এটা সু-পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা চাই অতি দ্রুত সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”
রোকনুজ্জামানের মা বলেন, “আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। ছেলে মৃত্যুর দুইদিন পর তার ঘরে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। ছোট্ট এই শিশুটিকে কি জবাব দিবো? জন্মের পরপরই এতিম হয়ে গেলো। ছেলের বউ এই অল্প বয়সে স্বামী হারা হলো। আমি হারালাম ছেলে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।”
হরিণচড়া এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী সাগর আহমেদ জানান, “২৪ মার্চ সকাল আনুমানিক ৮টার সময় তিনি মহাসড়কের পাশে অবস্থিত তার ফসলি জমি দেখতে এসেছিলেন। তারপর ৮টা ২০-২৫ মিনিট সময়ে তিনি রাস্তা পার হওয়ার জন্য ডান-বামে তাকিয়ে কোন গাড়ি আছে কিনা লক্ষ করছিলেন। পশ্চিম দিকে থেকে দেখতে পান একটি মোটরসাইকেল সামনে এবং পেছনে একটি সাদা হাইয়েচ গাড়ি আসছে।
মোটরসাইকেলের গতি সর্বচ্চ ৪৫-৫০ ছিলে। মহাসড়কের এই ফাঁকা স্থানে এসে আচমকা গাড়ি চালক গতি বাড়িয়ে দিয়ে তার চোঁখের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে গেলো। একটি মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলেন তিনি। তবে দীর্ঘ সময় যাবৎ মোটরসাইকেলটির পেছনে পেছনে আসছিলো হাইয়েচ গাড়িটি। শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো।”
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মকলেছুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে সলঙ্গা থানায়। হাইওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।’
কেকে/এআর