দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান
শুক্রবার (২৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এক মাস পবিত্র সিয়াম সাধনার পরে আনন্দের বার্তা নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের দুয়ারে সমাগত। জাতি এমন এক মুহূর্তে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন দেশ ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা জালিমের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেশের মানুষ মুক্ত পরিবেশে শ্বাস নিতে পারছে। দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে এবং শান্তিতে-স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছে।
তিনি আরও বলেন, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতি শান্তি-স্বস্তির দেশ পেয়েছে এবং কথা বলার সুযোগ পেয়েছে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের শহিদ হিসেবে কবুল করুন। আর যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন ও আহত হয়েছেন আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
তিনি বলেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তারা বিদেশে বসে এবং দেশে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা তাদের দোসরদের দিয়ে দেশে নানাভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেই যাচ্ছে। দেশে যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হতে পারে সেজন্য নানাভাবে বিতর্ক এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
এ অবস্থার অবসান ঘটিয়ে সরকারকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সেই সঙ্গে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং দেশবিরোধী সব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবিক বাংলাদেশ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মানুষের মাঝে আল্লাহর ভয় তথা তাকওয়ার গুণাবলি সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর বিধান মেনে চলার দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শেষে আমাদের মাঝে আগমন করছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতর মুসলমানদের জীবনে শান্তি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। পবিত্র ঈদুল ফিতর ধনী-গরিব সব শ্রেণির মুসলমানদের মধ্যে নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদের এই দিনে আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মানুষে মানুষে দয়া, সৌভ্রাতৃত্ব, সাম্য, ঐক্য ও ভালোবাসার এক মহা সেতুবন্ধন তৈরি করি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি হিংসা ও বিদ্বেষমুক্ত সমাজ গঠনে তৎপর হই এবং সমাজের অবহেলিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসি ও একে অপরের সুখানন্দ এবং দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নিই।
প্রিয় দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি দেশবাসীর সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ জীবন কামনা করছি। সেই সঙ্গে আমি সবাইকে আবারো আন্তরিকভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।
জামায়াত নেতৃবৃন্দ কে কোথায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন তা নিম্নে প্রদত্ত হলো:-
আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ঢাকায় নিজ বাড়িতে, নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান মক্কায়, নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় নিজ বাড়িতে, সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় নিজ বাড়িতে, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনার খানজাহান আলী থানায় নিজ বাড়িতে, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে।
এছাড়াও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নওকৈড় গ্রামে, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ ঢাকার বসুন্ধরায়, অ্যাড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মক্কায়, অ্যাড. মোয়াজ্জম হোসাইন হেলাল বরিশালে নিজ বাড়িতে, মাওলানা মো. শাহজাহান চট্টগ্রাম মহানগরীতে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাড. মতিউর রহমান আকন্দ ঢাকার উত্তরায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন, ইনশাল্লাহ।
কেকে/এএস