'গোরস্থানের নির্জনতায় যাদের বিচরণ, ঈদ উৎসবে করি তোমাদের শ্রদ্ধায় স্মরণ' এই প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক কবর খোদক ও মরদেহ গোসলকারীদের নিয়ে রংপুরে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকালে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে 'বাংলার চোখ' ও 'তানবীর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের' উদ্যোগে ১৩০ জন কবর খোদক-মরদেহ গোসলকারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়।
মাহমুদুন নবী বাবুলের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হাজী মো. তানবীর হোসেন আশরাফী। ঈদ সামগ্রী বিতরণ ও ইফতার অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান মিজান ও সদস্যসচিব মো. মোকাররম হোসাইন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন—দেড় শতাধিক কবর খোদক ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে নগদ অর্থ ও ঈদ সামগ্রীসহ প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার ঈদ উপহার প্রদান করা হয়।
ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ পেয়ে গোরখোদক আবুল কাশেম কাচু মিয়া বলেন, রাইতও নাই, দিনও নাই, যখন-তখন আমাদের কবর খুঁড়তে যাওয়া লাগে। কোনো সরকার আমাদের জন্য কিছু করে না। তানভীর ভাই হামার পাশে দাঁড়াইছে। হামরা অনেক খুশি।
মুন্সিপাড়া কবরস্থানের কেয়ারটেকার আতিয়ার বলেন, আমার বাড়ি গোরস্থানের ওখানে। ২০০৭ সালে কবরস্থানের দেখাশোনার দায়িত্বে আছি। কেউ কোনো দিন খোঁজ নেয় না। তানভীর ভাই ঈদ উপহার দিল। ১০ দিনের বাজার করি দিছে। আল্লাহ তানভীর ভাইকে ভালো করুক।
বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব তানবীর হোসেন আশরাফি বলেন, আমি বিভিন্ন আয়োজনে গিয়ে দেখি বিভিন্ন পেশার মানুষকে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু যারা মৃতদহকে গোসল করায়, মৃতদেহের কবরস্থের কাজ করে তাদের কেউ খোঁজ নেয় না। আজ ১৩০ জন গোরখোদক-মরদেহ গোসল করানো ব্যক্তি ও এই্ কবরস্থানে যারা কাজ করে, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা সমাজের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত কিছু মানুষদের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এদিকে ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ শেষে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাট্য, ক্রীড়া, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিবর্গের সাথে ইফতার ও মোনাজাত করা হয়।
কেকে/এএম