ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ও তার দোসরদের কাছে সমন্বয়ক শব্দটি বর্তমানে গালিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) নুর হোসেন হল মাঠ চত্বরে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘জুলাই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখতে এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিপ্লবী ছাত্রজনতার করণীয়’ শীর্ষক এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের কিছু অপরাধ রয়েছে, ৫ আগস্টের পূর্বে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। এটা আমাদের প্রথম অপরাধ। ৫ আগস্টের পূর্বে আমাদের সঙ্গে যত ধরনের লিয়াজোঁ করার চেষ্টা করা হয়েছে, সমঝোতা করার চেষ্টা করা হয়েছে, আয়নাঘরে রেখে ডিজিএফআই দিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জোরজবরদস্তি করে আমাদেরকে নেগোশিয়েট করতে বাধ্য করেছিল। তখনও আমরা ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় যাইনি। সেটা হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় অপরাধ। আমাদের তৃতীয় অপরাধ ৫ আগস্টের পরে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম- গণরুম নামে যে ধরনের টর্চারসেলগুলো ছিল কোনো ধরনের টর্চার সেল নাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের আরও অপরাধ, তারা টেন্ডারবাজিতে জড়িত না, তারা চাঁদাবাজিতে জড়িত না। বিদ্যমান যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত রয়েছে সেগুলোর প্রতিনিয়ত সমালোচনা করে তারা- এটি হচ্ছে আমাদের সর্বোচ্চ অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর যে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করেছে তাদের প্রতি প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু আপনাদের বর্তমান কী এমন অবস্থান হলো যার কারণে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার দোসরও আপনাদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ জানায়। তারা আপনাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদেরকে বলে আমরা হচ্ছি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
পিতার আগে সন্তান হাঁটলে রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের এমন বক্তব্যের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম যখন বুক পেতে দিয়েছিল তখন রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়নি বরং পিতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
হাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী সানজিদা পারভীন রিপার সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদ লিওন। এ সময় হাবিপ্রবি’র মো. সুজন রানা, তোফাজ্জল হোসেন তপুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় রাজনীতি চর্চার জায়গা হতে পারে না, দলীয় লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। আমরা আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করব, নেতা তৈরি করবো না। গত ১৬ বছরে যখনই কেউ নেতা হয়েছেন তার পা মাটি স্পর্শ করেনি। আমরা ওই ধরনের কোনো নেতা চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় রাজনীতি চর্চার জায়গা হতে পারে না। যদি রাজনৈতিকভাবে কাউকে সচেতন করতে তুলতে হয়, আপনি যদি উত্তরবঙ্গের নেতৃত্ব তৈরি করতে চান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেন।
তিনি আরও আমরা যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব চাই, আমরা যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তরবঙ্গে মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মত রাজনৈতিক নেতৃত্ব চাই তাহলে আবারও ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
কেকে/এইচএস