ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) চালু করার দাবি জানায়।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাত ১০টায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মিছিল নিয়ে আসে। রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর, হলপাড়া ঘুরে মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদেরকে ‘টু জিরো টু ফোর, হল পলিটিক্স নো মোর; হলে হলে রাজনীতি, চলবে না চলবে না; হল দখলের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও; ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইয়াসমিন ঐতিহ্য বলেন, যে ছাত্ররাজনীতি আমাদের মধ্যে ভীতি তৈরি করে সে ছাত্ররাজনীতি আমরা চাই না। আমরা ক্যাম্পাসে আর জিম্মি হতে চাই না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ আল মুনতাসির বলেন, হলে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির কালো অধ্যায় আমরা দেখেছি। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি আর চায় না। একাডেমিক ভবন এবং হল গুলোতে কোনো রাজনীতি থাকতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ডাকসুর ব্যাবস্থা করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন অপশক্তি হল দখল করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করার অপচেষ্টা করছে। অভ্যুত্থানের তিন মাস পার হলেও প্রশাসন সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের নয় দফার অন্যতম দফা সপ্তম দফা ছিল দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ক্যাম্পাসে হল দখলের মাধ্যমে ছাত্রলীগ যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তা যেনো আর ফিরে না আসে। দ্রুত ডাকসু চালু করে সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ডাকসু না থাকার কারণে অপশক্তিগুলো দখলদারিত্বের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শোষণের সুযোগ পায়।
আব্দুল কাদের বলেন, ছাত্ররাজনীতি মানে ছাত্রদের জন্য রাজনীতি। কিন্তু যখন তা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক হয়ে যায় তখন ছাত্রদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না।
“ছাত্ররাজনীতির কথা বললেই ছাত্রলীগের সেই নৃশংস সংস্কৃতি গুলো আমাদের সামনে ভেসে উঠে। আবরার হত্যা, গেস্টরুম, গণরুম, সিটের জন্য দিন-রাত দাসত্বের জীবন কাটানো এগুলোই মনে আসে। এমন নৃশংস সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে হল, ডিপার্টমেন্ট এবং ইন্সটিটিউটে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যত দ্রুত সম্ভব হয় একটি কাঠামো দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসনের ইমেইলের মাধ্যমে গণভোটের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের মতামত যাছাই করতে পারে। তবে খুব দ্রুত এবিষয়ে চুড়ান্ত কাঠামো দিতে হবে।
কেকে/এজে