কুড়িগ্রামের রাজারহাটে স্ত্রীর নামে জমি রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকৃতি জানানোয় স্বামীকে পিটিয়ে আহত করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ নিহত ব্যক্তির বাবা মঞ্জিল হক তার ছেলের স্ত্রী, শ্যালক, শ্যালিকা ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলার বোতলার পাড় ছাট মল্লিকবেগ গ্রামের আমানুর রহমান (৩০) শ্বশুরবাড়ি দেবিচরণ মণ্ডলের বাজার এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সম্প্রতি ২০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যে একটি জমি কিনেছিলেন এবং জমির মালিককে অধিকাংশ টাকা পরিশোধ করেছিলেন। ঈদের ছুটি শেষে জমি রেজিস্ট্রির কথা চলছিল, কিন্তু তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার ও শ্বশুর চেয়েছিলেন, জমিটি আকলিমার নামে রেজিস্ট্রি করা হোক। এতে আমানুর রাজি না হওয়ায় দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
বুধবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে আমানুরের স্ত্রী আকলিমা, শ্যালক মোকলেছ আলী, শ্যালিকা আফরোজা বেগম ও শ্বশুর মিলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে তাকে বিষপান করানো হয়। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হলে প্রথমে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল এবং অবশেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে আমানুরের মৃত্যু ঘটে।
নিহতের বাবা মঞ্জিল হক বৃহস্পতিবার রাতে রাজারহাট থানায় চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে, আমানুরের স্ত্রী আকলিমা বেগম জমির মালিকের বিরুদ্ধে টালবাহানার কারণে আমানুর বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে পালটা অভিযোগ করেছেন।
রাজারহাট থানার ওসি ছুটিতে থাকায় তার পরিবর্তে এসআই রেজাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে। একদিকে আমানুরের বাবার অভিযোগ—তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে, আকলিমার দাবি—জমির মালিক দলিল না করায় আমানুর আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আমানুরের শ্বশুর দাবি করেছেন, আমাকে ও আমার পরিবারকে মিথ্যা ফাঁসানো হচ্ছে। জমির মালিক সমস্ত টাকা নিয়েও দলিল করে দিতে গড়িমসি করায় মানসিক চাপে পড়ে আমানুর আত্মহত্যা করেছে।
কেকে/এএম