সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫,
২৪ চৈত্র ১৪৩১
বাংলা English

সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
শিরোনাম: প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা-১ পর্বত জয় বাবর আলীর      গাজায় নৃশংসতার প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ      গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ চলছে, নিহত অর্ধশতাধিক      চমকের অপেক্ষায় বাংলাদেশ       গত ১৫ বছরে অনেক চেষ্টা হয়েছে, আমি বিএনপিকে ভাঙতে দেইনি      বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি      বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা       
গ্রামবাংলা
কালাইয়ে আশ্রয়ণের ঘরে ঝুলছে তালা, বঞ্চিত প্রকৃতরা
মো. মোকাররম হোসাইন, কালাই (জয়পুরহাট)
প্রকাশ: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:২৭ পিএম  (ভিজিটর : ৪৯)
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত সরকারি ঘরগুলোর বেশিরভাগই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। দরজায় ঝুলছে তালা, আশপাশে আগাছায় ভরে গেছে জায়গা। প্রকৃত ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হলেও বাস্তবে তা ব্যবহার হচ্ছে না। বরাদ্দপ্রাপ্ত অনেকেই সেখানে বসবাস করছেন না। কেউ কেউ ঘর ভাড়া দিয়েছেন, আবার কেউ ঘর বিক্রিও করে ফেলেছেন।

২০১৮ সালে কালাই উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে চার দফায় মোট ১৭৮টি আধা-পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘরের জন্য ব্যয় হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। সুবিধাভোগীদের জন্য প্রতিটি ঘরের সঙ্গে দুই শতক সরকারি খাস জমিও বরাদ্দ দেওয়া হয়, যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারেন। ঘরগুলোর অবকাঠামোর মধ্যে ছিল দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি শৌচাগার, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সরকারি উদ্যোগটি দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কবলে পড়ে প্রকৃত ভূমিহীনদের পরিবর্তে রাজনৈতিক পরিচিত ও সুপারিশপ্রাপ্তদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে অনেকেই সেখানে থাকছেন না বরং নিজেদের আসল বাড়িতে ফিরে গেছেন কিংবা ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘর ফাঁকা। অনেক ঘরে মাকড়সার জাল জমেছে, বারান্দা ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। কিছু বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি মাসে এক-দুবার এসে ঘর পরিষ্কার করে ফিরে যান নিজেদের স্থায়ী ঠিকানায়। মাত্রাই ইউনিয়নের বলিগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪টি ঘরের মধ্যে ৮টি তালাবদ্ধ। কাঁটাহার আদর্শ গ্রামে বরাদ্দকৃত ৫৮টি ঘরের মধ্যে অন্তত ২৭টি দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ পড়ে আছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যেসব সুবিধাভোগী প্রকল্পে থাকতে রাজি নন, তাদের মধ্যে অনেকেই ঘর ভাড়া দিয়েছেন কিংবা বিক্রি করে দিয়েছেন। উদয়পুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পেও ৩৫টি ঘরের মধ্যে ১৮টি ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। জিন্দারপুর বাদাউচ্চ আদর্শ গ্রামে ১০টি ঘরের মধ্যে ৬টি ফাঁকা, শ্রীপুর গ্রামে ১০টি ঘরের মধ্যে ৪টিতে তালা ঝুলছে। পুনট ইউনিয়নের ১৫টি ঘরের মধ্যে ৭টিতেই কেউ থাকছেন না।

অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, নিজের জমি ও বাড়ি আছে এমন অনেক সচ্ছল ব্যক্তি ঘুষ দিয়ে ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন। অন্যদিকে টাকা দিতে না পারায় অনেক গৃহহীন পরিবার ঘর বরাদ্দ পাননি। যে কারণে, এসব সচ্ছল ব্যক্তি ঘর পাওয়ার পর সেখানে বসবাস না করে বিক্রি করে দিচ্ছেন। যেমন—বানপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে সেলিনা বিবি ও রাজিয়া খাতুন তাদের ঘর ৭৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছেন। মোছা. শিউলী বেগম তার ঘর ৫০ হাজার টাকায় মাজেদা বিবির কাছে বিক্রি করেছেন। জিন্দারপুর আদর্শ গ্রামে শিল্পী আক্তার ও মজনু মিয়া মাসে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। আবার কিছু ব্যক্তি সরকারি ঘর দখলে রেখে সেখানে গবাদিপশু পালন করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৃত ভূমিহীনদের বরাদ্দ না দিয়ে রাজনৈতিক সুপারিশের ভিত্তিতে অনেক স্বচ্ছল ব্যক্তিকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যাদের নিজেদের জমি ও বাড়ি রয়েছে।ঘর বরাদ্দের সময় যথাযথ যাচাই-বাছাই এবং অবৈধ লেনদেন না হলে প্রকৃত গৃহহীনরাই আশ্রয়ণের ঘরগুলো পেতেন বলে মনে করছেন তারা। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় উপযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবার অভাব থাকায় অনেকেই সেখানে থাকতে চান না।

এই অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবং কিছু অনিয়মের অভিযোগও পাওয়া গেছে। যারা ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের জন্য নতুনভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা সরকারি ঘর বিক্রি বা ভাড়া দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আঞ্জুমানে আশেকানে মুস্তাফার (সা.) উদ্যোগে বার্ষিক ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত
গাজায় মুসলিম হত্যা বন্ধ করতে হবে: ড. ইকবাল
কুমিল্লায় কেএফসির আউটলেটে হামলা ও ভাঙচুর
সিলেটে কেএফসি-বাটা-ইউনিমার্টে হামলা ও ভাঙচুর
নীরবতা ভাঙুন, গাজার পক্ষে দাঁড়ান

সর্বাধিক পঠিত

গত ১৫ বছরে অনেক চেষ্টা হয়েছে, আমি বিএনপিকে ভাঙতে দেইনি
জাতীয় নির্বাচনে নিষিদ্ধ হচ্ছে পোস্টার
অপ্রতিরোধ্য গরু পাচার
গাজায় নৃশংসতার প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল খোলা বাজারে বিক্রি, হাতেনাতে ধরলেন ইউএনও

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close