গুগল ম্যাপসে ফিলিস্তিন নামে কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের লেবেল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন যে গুগল ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনকে তার মানচিত্র থেকে মুছে দিয়েছে।
তবে বাস্তবতা হলো, গুগল কখনোই তার মানচিত্রে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে লেবেল করেনি। যখন ব্যবহারকারীরা "প্যালেস্টাইন" লিখে সার্চ করেন, তখন মানচিত্রটি ইসরাইল-ফিলিস্তিন অঞ্চলে জুম করে এবং গাজা উপকূল ও পশ্চিম তীরের সীমানা প্রদর্শন করে, কিন্তু সেখানে "ফিলিস্তিন" নামে কোনো রাষ্ট্রীয় লেবেল দেখা যায় না।
এই ইস্যুটি ২০১৬ সালে ব্যাপক আলোচনায় আসে যখন ব্যবহারকারীরা লক্ষ্য করেন যে গাজা ও পশ্চিম তীরের লেবেলগুলো গুগল ম্যাপস থেকে সাময়িকভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে। গুগল এই ঘটনাকে একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলে দাবি করে এবং পরে লেবেলগুলো পুনরুদ্ধার করে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এটা স্পষ্ট করে যে তারা ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর মর্যাদা নিয়ে ঐক্যমত নেই। জাতিসংঘের ১৩৯টি সদস্য রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ এখনো তা দেয়নি।
এই নীতির পেছনে গুগলের রাজনৈতিক অবস্থানও একটি বড় কারণ বলে মনে করা হয়। ২০১৬ সালে চেঞ্জ.অর্গ-এ একটি প্রচারণায় দাবি করা হয়েছিল যে গুগল ইসরাইলি সরকারের চাপে ফিলিস্তিনের নাম মুছে দিয়েছে। এছাড়া গুগলের প্রতিষ্ঠাতাদের ইসরাইল-সমর্থক অবস্থানও এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে বলে অনেকে মনে করেন। তবে গুগল তাদের মানচিত্রে শুধুমাত্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রগুলোকেই অন্তর্ভুক্ত করার নীতি অনুসরণ করে আসছে।
এই বিতর্ক শুধু একটি প্রযুক্তি কোম্পানির সিদ্ধান্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অধিকারের প্রশ্নের সাথে জড়িত। ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে চলা আন্দোলন এই ইস্যুকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। গুগলের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর উপর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য চাপ বাড়ছে, এবং ভবিষ্যতে তাদের নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
কেকে/এআর