গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্ক থেকে একসঙ্গে তিনটি লেমুর চুরি হয়েছে।এ ঘটনায় সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর রিমাইন্ডার নোটিশ দিলেও ১৫ দিনেও ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেনি পুলিশ, অভিযোগ সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকালে গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খোলা কাগজকে জানান,গত ২৩ তারিখ দিবাগত রাতে পার্কে খাঁচার মতো বেষ্টনীর নেট কেটে চুরি করে নিয়ে যায়তিনটি লেমুর।
এখনো কাটা দাগ রয়েছে। আমরা আশপাশে খোজাখুজি করেছি। আমি ২৪ তারিখে থানায় জিডি করেছি। থানা এখনো পর্যন্ত মামলা রুজু করে নাই। থানা পুলিশ এখনো তদন্তে আসেনাই। তারা কখন তদন্ত করবে জানিনা। মামলাটি রুজু করতে চিঠি আকারে রিমাইন্ড দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি ডিএফও এর মাধ্যমে গাজীপুরের এসপিকে বলা হয়েছে। সব দিক থেকে আমরা চেষ্টা করেছি। তারা যদি তদন্তে আসতো, আশপাশে ইনকোয়েরী করে সন্দেহভাজনকে ধরতো তাও তথ্য বের হয়ে আসতো।
তিনি জানান, পাঁচ তারিখের পরে পার্কে দুই বার চুরি হইছে। এর আগেও হইছে। পাঁচ তারিখের পরে দুটি পাখি চুরি হয়েছিল। দুইটাই উদ্ধার হইছে তবে একটা মৃত। এই এলাকায় চুর অনেক। সাফারি পার্কে বাউন্ডারি ওয়াল নিচু। নেট কেটে চুরি করা সহজ। রাতে এসব চুরি হয়। আমাদের নিরাপত্তা প্রহরী নাই। আমরা ৬৫ জন স্টাফ কর্মরত। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের সিসি ক্যামেরা নাই। পাঁচ তারিখের পরে সিসি ক্যামেরা ভেংগে ফেলেছে। পার্কে বিভিন্ন জাতের ১৩০০ বেশি প্রাণী রয়েছে। যে কোনো সময় অন্য প্রানী চুরি হতে পারে। রাতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৮ মার্চ বিকালে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল খোলা কাগজকে বলেন, পার্কটির কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে আজকে একটি মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনো কেন যাননি জানত চাইলে ওসি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বছর ২২ নভেম্বর রাতে একই কায়দায় দুটি ম্যাকাও পাখি চুরি হয়। এ ঘটনায় মামলা করার পর পুলিশ টঙ্গী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ম্যাকাও উদ্ধারসহ জড়িত আরিফ (২৩) নামে একজনকে গ্রেফতার করে। পরে আরেকটি পাখি মৃত উদ্ধার করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও প্রাণীর সঙ্গে দুটি লেমুর উদ্ধার করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে সেগুলো অন্য দেশে পাচার করা হচ্ছিল। পরে লেমুর দুইটিকে এই সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। উদ্ধার করা লেমুর দুটির মধ্যে একটি ছিল মাদি ও আরেকটি মর্দা।ওই বছরের ২৭ নভেম্বর লেমুর দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় দুটি শাবক। গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি একটি লেমুরের মৃত্যু হয়। এরপর সেখানে তিনটি লেমুর ছিল।
কেকে/এআর