চাঁদপুরের মতলব অঞ্চলের মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত ২৫কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একশ্রেণির জেলে প্রকাশ্যে জাটকা শিকার চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নিষেধাজ্ঞার একমাস যাবৎ কৌশলে চলছে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সকাল থেকে বেলা ৫টা পর্যন্ত মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনাকারীদের তৎপরতার মধ্যেও অনেক জেলে নদীতে জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন। বিকেল ৫টার পর নদীতে অভিযান পরিচালনাকারীদের উপস্থিতি কমে যায়। তখন ইলিশ শিকারে নামেন দলবেঁধে জেলেরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিস্তীর্ণ নদীতে জেলেরা রাতের অন্ধকারে জাল ফেলে জাটকা শিকার করে থাকে। সারারাত জাটকা শিকার করে সকাল ভোরে নদীর তীরে এনে বিক্রি করছেন বলেও জানান মেঘনা নদীতীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা।
উপজেলার ষাটনল এলাকার বাসিন্দা মো. শুক্কুর আলী মিয়া জানান, ষাটনল এলাকার বাবুবাজারে ফজরের নামাজের পর থেকে ৭টা পর্যন্ত মৎস্য আড়তে বিক্রি হয় জাটকা ইলিশ’সহ বিভিন্ন নদীর মাছ। এ সময় প্রশাসনের কোন ঝামেলা থাকেনা।
আমিরাবাদ এলাকার সালাউদ্দিন, খলিলুর রহমান জানান, দুপুর ১২টা থেকে আমিরাবাদ বাজারের নদীর পারে ত্রিপাল টাঙিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। কয়েকশ পাইকাররা এখান থেকে জাটকা কিনে নিয়ে, অন্য জায়গায় বিক্রি করে। এ সময় এ বাজারে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি হয়।
এ ছাড়াও উপজেলার এখলাসপুর, মোহনপুর, দশআনী, মুক্তির পল্লী, জনতার বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ।
মতলব উত্তরের জেলে ইসমাইল, মালেক বেপারী, আরশাদ প্রধানসহ একাধিক জেলেরা জানান, আমরা মৎস অফিসের ইমান আলীর মাধ্যমে উপজেলা মৎস অফিসকে ম্যানেজ করে প্রতি নৌকায় ২০হাজার টাকা দিয়ে টোকেন নিয়েছি, টোকেন ছাড়া নদীতে মাছ ধরতে নামলে আমাদের জেল জরিমানা করে।
আমিরাবাদ মৎস আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, মাছ না ধরলে মানুষ না খেয়ে মরবে। জেলেরা আছে খুবই অভাব অনটনে। জাল দিয়ে মাছ ধরে চলে তাদের সংসার। তাই আমরা সবকিছু ম্যানেজ করেই বাজার চালিয়ে যাচ্ছি।
মোহনপুর কোস্টগার্ড ক্যাম্পে কথা হলে জানা যায়, নদীতে আপনি এখনো জেলে নৌকা পাবেন কিন্তু আমরা কি করব? মূলত আমরা তো নৌ-পুলিশ ফাঁড়িকে সাহায্য করতে আসছি।
রাতে মেঘনা নদী জেলেদের দখলে আপনারা কি রাতে নদীতে অভিযান করেন এমন প্রশ্নের জবাবে মোহনপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জানান, আমার ফোর্স কম তাই রাতে অভিযান পরিচালনা করতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। তারপরও আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, আমাদের অফিসে জনবল কম তার পরেও আমরা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ইচ্ছে করলে আপনারা (সাংবাদিক) আমাদের সাথে অভিযানে অংশ নিতে পারেন।
কেকে/এআর