পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আইনি পদক্ষেপ তাত্ক্ষণিকভাবে হলে আমাদের একটা আশা ছিল। এতো দেরিতে হওয়ার করণে আমাদের চ্যালেঞ্জটা একটু বেশি বেড়ে গেছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১ টায় গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনের পরে তিনি একথা বলেন।
এখন কেও দোষী সাব্যস্থ হওয়ার আগে তাকে দোষী বলা যায় না। আমি যখন বললাম, ময়না পাখি চুরি হলো না, ময়না পাখি নিখোঁজ হলো না, তাহলে লেমুর নিখোঁজ হয়ে গেল কেন? লেমুর যে বুঝে, এটা আমজনতার বিষয় না। আপনি একটা হরিণ এর কথা বলতে পারেন, বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে চলে এসেছে মানুষ খেয়ে ফেলেছে, এটা একটা বিষয়।
কিন্তু লেমুর মতো একটা প্রজাতি কেন নিখোঁজ হয়ে গেল, কেন হারিয়ে গেল? এটার সঙ্গে এখানে যারা প্রহরায় ছিল, দায়িত্ব তারা কতটুকুন পালন করেছে? ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে, ঘটনা ঘটে যাওয়ার সময়, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে এটা অবশ্যই দেখতে হবে।
আর এটা এমন একটা জায়গা খুবই সংবেদনশীল। বারবার যেখানে এরকম প্রাণীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, সেই জায়গাগুলোতে কেন আমার সিসি ক্যামেরা কাজ করছে না? সেই জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগাতে আমাদের কত টাকা লাগবে যে আমরা লাগাতে পারব না। নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটা কথা বলা হয়, সেটাও আমাকে দেখতে হবে। আমি মনে করি, এখানে যেভাবে দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল, সেভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়নি।
আর এ রকম দুর্লভ প্রাণী হারিয়ে গেলে ১৪ দিন পরে মামলা দায়ের করে অনুসন্ধান শুরু করা হলে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে। আমাদের এইখানে যে একটা সংগঠিত অপরাধী চক্র আছে এটা প্রমাণিত। এই জন্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট ধরে অনেক দেশে পাচার হয়। কাজেই এখানে সংঘবদ্ধ দলটি কী করে খোঁজা যায়, সেটাও কিন্তু আজকে আমি সবার সঙ্গে আলোচনা করব।
তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের কর্মকাণ্ডে বিশেষজ্ঞ বা বন্যপ্রাণী নিয়ে পেশেনেট ভাবে কাজ করে এমন কাওকে সম্পৃক্ত করি নাই। আমি সরকারে ডুকে দেখেছি, সরকার হিসেবে কাজ করে।সমাজে যে আরো অনেক এক্সপার্টাইজ আছে, তাদের যে সম্পৃক্ত করলে সরকারের ও যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে, সরকারের কাজের চাপটা সরকারের ওপর থেকে কমে আসে, সেই জিনিসটা মিসিং, সেই জিনিসটা আমি ইন্ট্রডিউস করবো এবং এই লেমুরের ঘটনাটা একদম যতটুকু বিস্তারিত সম্ভব বিস্তারিতভাবে তদন্ত করব, বাইরের বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করব এবং কী করে ভবিষ্যতে এটা প্রতিহত করা যায়,এটা দেখব।
তিনি বলেন, আপনি যদি দেখেন লেমুরটা যেখান থেকে হারিয়ে গেছে, সেই জায়গাটা অরক্ষিত এটা আমি বলব না। জায়গাটা আমি নিজেও ঘুরে দেখেছি, এই খানে ভিতরে ঢুকার সুযোগটা তারা কেমন করে পেল এটার ব্যাখ্যা আমি অবশ্যই নিব।
জনাব মো. আমির হোসেন চৌধুরী, প্রধান বন সংরক্ষক , বনভবন আগারগাঁও ঢাকা, জনাব মোঃ সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, বন সংরক্ষণ ও প্রকৃতি অঞ্চল ঢাকা। জনাব শারমিন আক্তার, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মহাখালী ঢাকা। মো. রফিকুল ইসলাম। সহকারি বন সংরক্ষক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজীপুর সাফারি পার্ক গাজীপুর উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল-এর প্রধান বন সংরক্ষক কর্মকর্তা আমির হোসেন চৌধুরী, বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটয়ারি, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, সাফারি পার্কের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/এএস