রাজধানীর মিরপুরে ছাত্রহত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুদ্দিন হাওলাদারকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপন ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুরের কল্যাণপুর নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মাইনুদ্দিন হাওলাদার ওরফে ‘পিয়াজ মাইনুদ্দিন’ মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট দায়ের করা একটি ছাত্রহত্যা মামলায় তিনি ২৩ নম্বর আসামি।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ মাইনুদ্দিনের অবস্থানের খবর পেয়ে কল্যাণপুর নতুনবাজার এলাকায় অভিযান চালায় এবং তাকে আটক করে গাড়িতে তোলে। এ সময় মিরপুর ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ স্বপন দলবল নিয়ে উপস্থিত হন এবং পুলিশকে মাইনুদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে পুলিশি হেফাজত থেকে মাইনুদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও এবং স্থিরচিত্র সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যায়, পুলিশের গাড়িতে থাকা অবস্থায় মাইনুদ্দিনকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন স্বপন ও তার লোকজন।
এদিকে ছাত্রহত্যা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা একটি গোপন প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপনের জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে।
পুলিশের ওই গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—মিরপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ স্বপনের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাত্রহত্যা মামলার আসামি মাইনুদ্দিনকে জোর করে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শাকিল আহমেদ স্বপন বলেন, আমি এ ঘটনায় জড়িত নই। লোকজনের হট্টগোলের খবর শুনে সেখানে গেছি। মাইনুদ্দিনকে আমি ঠিকমতো চিনি না। তিনি ছাত্রহত্যা মামলার আসামি কিংবা আওয়ামী লীগ করেন কিনা তাও আমার জানা নেই। আমি ১৭ বছর এলাকার বাইরে ছিলাম। পুলিশের কাছ থেকে কেউ আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে কিনা তাও জানি না।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, এ ঘটনা আমি মঙ্গলবার রাতে শুনেছি। যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে শাকিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমন বলেন, মাইনুদ্দিন হাওলাদারের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সঠিক নয়।
কেকে/এএম