নওগাঁর পোরশায় ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমি ওয়াক্ফ স্টেটের দাবি করে জবর দখল করার চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) উপজেলার পোরশা সদরের গোলাম মোস্তফা শাহ্ এর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে আসাদ শাহ্ এর ছেলে ছাইদ শাহ্ লিখিত বক্তব্যে বলেন পোরশার আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ একজন জমিদার ছিলেন। আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ ২৪ এপ্রিল ১৯২১ সালে ১৯৮৭নং দলিলে তার ১৪২.২৩ একর জমি ওয়াক্ফ রেজিস্ট্রি করে দেন। উপজেলার সুহাতী মৌজায় সিএস ৮০নং খতিয়ানে ১৪২.২৩ একর সম্পত্তি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ এর অবিভক্ত বাংলা প্রদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের অধীন সরাসরি রেভিনিউ প্রদেয় জমিদারি স্বত্বে স্বত্বদখলীয় সম্পত্তি থাকা কালে সিএস জরিপের রেকর্ডের পূর্বে গত ইং ০৮ এপ্রিল ১৯২১ সালে রেজিস্ট্রিকৃত ১৯৮৭নং ওয়াক্ফনামা দলিল মূলে উক্ত সম্পত্তি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ ওয়াক্ফ স্টেট স্থাপন করে তার নামে হস্তান্ত করেন এবং গত সিএস জরিপের চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তুত হওয়ার পূর্বেই উক্ত ওয়াক্ফ স্টেট হতে ৫৬.৮২একর জমি আজিজ মোহাম্মদ শাহ্ নিজেই মতোয়াল্লি হয়ে জীবিত থাকা অবস্থায় প্রজাপত্তন দেন।
আর সেগুলোই সিএস, এসএ ও আরএস খতিয়ানে প্রজাদের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। বাকি ৮৫.৪১ একর পরবর্তী মোতয়াল্লি দলিলের শর্ত মোতাবেক সাইদ শাহ্ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট প্রজাপত্তন দেন এবং খাজনা আদায় করেন। দলিলের শর্ত মোতাবেক পরবর্তী মোতয়াল্লি সাইদ শাহ্ মৃত্যুর পর কাশেম শাহ্ মোতয়াল্লি নিযুক্ত হন। কাশেম শাহ্ বাংলা ১৩৫৫সন হতে বাংলা ১৩৬২ সন পর্যন্ত প্রজাপত্তনের জমি বিভিন্ন প্রজাদের নিকট হতে খাজনা আদায় করেন।
জমিদারি আইন বিলুপ্ত হওয়ার পর মোতয়াল্লি মোহাম্মদ কাশেম শাহ্ গত ১৩/১১/১৯৬৩ইং সালে ১২৭৮৭নং ডায়েরি মূলে বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের অফিসে দরখাস্ত দিয়ে জমিদারি শর্তের সম্পত্তি বাংলা ১৩৬৩ সনের ১ বৈশাখ হতে হুকুম দখল দ্বারা সরকার খাস প্রজাদের নিকট হতে খাজনা গ্রহণ করছেন। কাশেম শাহ্ মোতয়াল্লি থাকা অবস্থায় ৮৫.৪১ একর জমি এসএ ও আরএস রেকর্ড বিভিন্ন প্রজাদের নামে হয়েছে এবং খাজনা সরকার নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাইদ শাহ্ আরও বলেন, উপজেলার সুহাতি মৌজায় ১৪২.২৩ একর জমির মধ্যে ১১৪.৭৪ একর জমি বিভিন্ন লোক প্রজাপত্তন নিয়ে আজ পর্যন্ত সকলেই ভোগ দখল করে আসছেন। আরএস ৬৫নং খতিয়ানে ২৭.৪৯ একর আসাদ শাহ্ নামে রেকর্ড হয়েছে এবং সরকারের নিকট নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু গত ২০১৪ ইং সনে সাবেক সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদারের নেতৃত্বে শরিফউদ্দীন শাহ্ (গেনা হুজুর) ওয়াক্ফ স্টেটের জমি দাবি করে জোরপূর্বক স্বৈরাচারী কায়দায় আমাদের চাষাবাদকৃত ধান জমি থেকে কেটে নিয়ে বাড়ির পাশে খলায় রাখা পালাদার ধান লুটপাট করে নিয়ে যায়। এবং সেই থেকে তারা আওয়ামী লীগ থাকা অবস্থায় জোর করে আমাদের জমির ধান লুটপাট করে খেয়ে এসেছে। গেনা হুজুর মৃত্যুর পর এখন স্থানীয় নজরুল ইসলাম শাহ্ ওয়াক্ফ স্টেটের জমি দাবি করে জবর দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসাদ শাহ্ এর ছেলে মোস্তফা শাহ্সহ তাদের সব ওয়ারিশগণ উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/এএস