পূর্বের ঘটনার জেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর পৌনে একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে মারামারির সূত্রপাত হয়।
আহতরা হলেন, আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শাহরুখ মাহমুদ এবং ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাইমেনুল ইসলাম নুহান। অন্যদিকে ফাইন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান তুষার এবং শাহাদাত হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে ফাইন্যান্স বিভাগের আসিফ, শাহাদাতসহ কিছু শিক্ষার্থী খাওয়া দাওয়া করছিল। এসময় ছাত্রদল কর্মী শাহরুখ মাহমুদ, মোহাম্মদ আমীর, রফিকুল ইসলামসহ আইন, আইন ও ভূমি প্রশাসন এবং লোক প্রশাসন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তাদের উপর হামলা করে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আইন বিভাগের একজন এবং ফাইন্যান্স বিভাগের ২ শিক্ষার্থী আহত হয়।
পরে আইন বিভাগের আহত শিক্ষার্থীকে নিয়ে রাবি মেডিকেল সেন্টারে গেলে ফাইন্যান্স ও বিবিএ-এর কয়েকটি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী তাদের উপর হামলা করে। এসময় আইন বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থী পালিয়ে যেতে পারলেও শাহরুখ মাহমুদকে আটকে মারধর করে তারা। এসময় রাবি প্রক্টর ও প্রক্টোরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
পরে বিকালে ফাইন্যান্স বিভাগের আহত শিক্ষার্থীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে আইন বিভাগের ভর্তি থাকতে দেখেন। আবার সংঘর্ষের আশংকায় তারা হাসপাতাল ত্যাগের উদ্যোগ নিলে তাদের উপর আরেক দফা চড়াও হন আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গতকাল সোমবার। এদিন রাতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাধন মুখার্জির ক্যাম্পাসে নিজের কাজ শেষে ফেরার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট সংলগ্ন বাস স্ট্যান্ডে ফাইন্যান্স বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তাঁর উপরে চড়াও হয়।
ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা ২০২৪ সালের একটি ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজনে ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে ঝামেলা এবং কয়েকজনকে মারধর করেছিল।
ফাইন্যান্স ও আইন বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে সংযোগটি কেটে দেন তারা।
সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, মূলত পূর্ব কোনো দ্বন্দ্বের জের ধরেই নতুন করে আজকের মারামারির ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, পূর্বের ইফতারির বিষয় নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। গতকাল রাতে কাজলায় তাদের কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতিও হয়। এরপর আজ দুপুরে আরেক দফা মারামারি হয়েছে। কিন্তু ঘটনা যেটাই হোক মারামারির ঘটনা ঘটেছে এটি প্রমাণিত এবং এটা দুঃখজনক ঘটনা।
তিনি বলেন, রাবি মেডিকেল সেন্টারেও তৃতীয় দফা মারামারি হয়েছে। সে সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। এতে আমাদের কাজ আরো সহজ হয়েছে। আমরা অতিদ্রুত সব প্রমাণ নিয়ে তদন্তে নামবো। আমরা ভুক্তভোগীদের নিরাপদে হলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। পুলিশ প্রশাসনকেও নির্দেশনা দিয়েছি কোনো দলীয় প্রভাবের তোয়াক্কা না করে। পরবর্তীতে যদি কোনো মারামারির ঘটনা ঘটে তবে দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
কেকে/ এমএস