কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও, বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। স্কুলে শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নগন্য। অলস সময় কাটে শিক্ষকদের। এমনি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখা মেলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এরপর ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের তথ্য মতে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫০ জন এবং ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে।
তবে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কাগজ-কলমে ১৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। বিদ্যালয়টির একটি পাঁকা ভবন ও অন্যটি টিনশেড ভবন। প্রতিটি ভবনেই রয়েছে ক্লাসরুম। সবগুলো শ্রেণি কক্ষেই ২ থেকে ৫ জন করে শিক্ষার্থী উপস্থিতি দেখা যায়। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া যায়। শুধু অফিস কক্ষে কয়েকজন শিক্ষককে বসে থাকতে দেখা যায়। এই চিত্র প্রতিকার্য দিবসের।
সম্প্রতি বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুল করিম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ও জমি না থাকায় বহিরাগত শিক্ষার্থী দিয়ে খাতা পত্র ঠিক রেখে পরিচালিত হয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। নীতিমালা মোতাবেক .৫০ শতক অখন্ড জমির প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়ের নামে অখন্ড .২৫ শতক জমি রয়েছে। যা এমপিও নীতিমালা-২০২১ বহির্ভূত।
ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড হতে মাধ্যমিকের স্বীকৃতির জন্য কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ও জমি না থাকা স্বত্বেও মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে মাধ্যমিক স্তরের স্বীকৃতি নিয়ে আসে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম পর্যন্ত শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে মাত্র ১২ থেকে ১৫ জন। বহিরাগত শিক্ষার্থী দিয়ে ৯ম -১০ম শ্রেণির রেজি: করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হয়। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষক/কর্মচারী কর্মরত আছে। যাদের প্রতিষ্ঠান সরকারী অংশের বেতন ভাতাদী প্রদান করা ২,০০০০০ (দুই লক্ষ টাকা)। যা সরকারের আর্থিক ক্ষতির কারণ বলে অভিযোগে বলা হয়।
উপস্থিতি কম কেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, কোন সময় কম শিক্ষার্থী উপস্থিত হয় আবার কোন সময় বেশি উপস্থিত হয় বলে দায় এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমি এ সম্পর্কে অবগত নই। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, অভিযোগ পেলাম। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ এমএস