পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কুয়াকাটা প্রেস ক্লাব সংলগ্ন মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
জানা যায়, গত ২০ মার্চ রাতে মেহেদী হাসান (২৩) তার স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে (১৭) হত্যার অভিযোগ করে মাফিয়ার পরিবার।
উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভার পাঞ্জুপাড়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে মাফিয়ার পরিবার এটি হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবার বলছে এটি আত্মহত্যা।
এ ঘটনায় মহিপুর থানা একটি মামলা হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে মাফিয়ার পরিবারের। এ ঘটনায় নিহতের মা হাফিজা বেগম বাদী হয়ে গত ১ এপ্রিল মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ ইচ্ছা করেই আসামিদের গ্রেফতার করছেন না এমন দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নিহত মাফিয়া বেগমের ভাই বনি আমিন বলেন, আমার বোনকে মারধরের পরে আমার বোনের স্বামীসহ পরিবারের লোকজন গলা টিপে হত্যা করে। পরে অসুস্থ্ নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। বোনকে হাসপাতালে রেখেই সকলে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় আমরা মামলা করতে গেলে মহিপুর থানা পুলিশ প্রথমে গড়িমসি করেন। পরে পহেলা এপ্রিল মামলা আমলে নিলেও কোনো আসামিকে তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। আসামিদের লোকেশন শনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেন না।
মাফিয়ার মা হাফিজা বেগম ও ভাই বনি আমিনসহ তাদের পারিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস আগে পারবারিকভাবে একই গ্রামের মেহেদী হাসানের সঙ্গে মাফিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী মেহেদী যৌতুকের দাবিতে মাফিয়াকে নির্যাতন করে আসছেন।
গত ২০ মার্চ দুপুরে মাফিয়া তার ছোটবোন মারিয়াকে (১০) তার স্বামীর বাড়িতে যেতে বলেন। এ সময় মারিয়া তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে ব্যাপক মারধর করছে দেখতে পেয়ে বাড়িতে এসে জানান। রাত সাড়ে আটটার দিকে মেহেদী তার শ্বশুর হারিছকে ফোন দিয়ে বলে মাফিয়া গলায় ফাঁস নিয়েছে।
পরে মা হাফিজা বেগম ও বাবা হারিছ তাদের বাড়িতে গিয়ে মাফিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে মাফিয়ার পরিবার এটিকে হত্যা বললেও মেহেদীর পরিবারের দাবি মাফিয়া সবার অগোচরে ঘরের দোতলায় গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
মামলার বাদী মাফিয়া বেগমের মা হাফিজা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনার ২৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনোরকম সহযোগিতা করছেন না। আসামিরা এখনো ঘুরে বেড়ান আমাদের চোখের সামনে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু হানিফ বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
কেকে/এএম