লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক হাসিনুর রহমান ও ১২ বছরের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতির পরিবারকে সমবেদনা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সেখানে তিনি নিহতের কবর জিয়ারত করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট কালেক্টর মাঠ জনসভা শেষ করে কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি সংক্ষিপ্ত পথসভা ও আলোচনা সভায় জামায়াত আমির বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, সরকারকে বলব, এই হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশের মাটিতে হয়েছে, অথচ লাশ নিয়ে গেছে ভারত। সুতরাং এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলাদেশেই হতে হবে। আপনারা উদ্যোগ নিন এবং ভারতকে সদিচ্ছা নিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।
জামায়াত আমির বলেন, সীমান্তের যুবক হাসিনুর নিজ দেশের ভুট্টা খেতে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। ভারতীয় বিএসএফ তার বুকের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে গুলি করে হত্যা করেছে। সে তো ভারতে যায়নি, সে তো সীমান্তে কামান নিয়ে যায়নি। নিরস্ত্র নিরীহ হাসিনুরকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। আগের সরকার তো স্টীলের চশমা পড়ত জন্য অন্ধকার দেখত, সীমান্ত হত্যা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমান সরকারকে বলব, অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছেন। সীমান্ত হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিন, ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সাথে আছে।
তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষ ভাঙে কিন্তু মচকায় না। এদেশের মানুষ লড়াই করতে জানে, আপোষ করতে জানে না। তবে আমরা লড়াইয়ে যেতে রাজি না।পৃথিবীর একটা সভ্য দেশ বাংলাদেশ-ভারত উভয় একসঙ্গে চলুক। সমতার ভিত্তিতে আমাদের ভালোবাসার বন্ধন গড়ে উঠুক।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ফেলানীসহ কোনো সীমান্ত হত্যাকাণ্ডেরই বিচার হয়নি। অন্তত এবার হাসিনুর হত্যাকাণ্ডের বিচার করে প্রমাণ করুন যে আপনারা আমাদের বন্ধু।
এর আগে জামায়াত আমির লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের ভোটমারীতে সম্প্রতি মর্মান্তিকভাবে খুন হওয়া শিশু জান্নাতি আক্তারের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি পরিবারটিকে সমবেদনা জানান এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার শৈলমারী চরের ফজলুল হকের ১১ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতিকে বাড়িতে একা পেয়ে দুর্বৃত্তরা পাশের ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
কেকে/এএম