ছিলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইউনিয়ন সেক্রেটারি। নিয়েছেন দলীয় সুযোগ সুবিধা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় করতেন ত্রাসের রাজত্ব। পটপরিবর্তনের পর নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তিনি এখন জিয়া মঞ্চের সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নে। এতে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি জিয়া মঞ্চের হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়ন শাখার ২০ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জামসেদুল ইসলাম টুটুলকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এর আগে তিনি একই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
একাধিক দলীয় নেতাকর্মী জানান, জামসেদুল ইসলাম টুটুল স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেক্রেটারি হয়ে এলাকায় অসহায় নিরীহ মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করত। সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে সকল সভা সেমিনারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করত। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দমন নিপীড়নে সহযোগিতা করত। সে আওয়ামী লীগের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন আর আমরা একাধিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। সরকার পতনের পর এই ব্যক্তি কীভাবে নিজেকে বিএনপির লোক দাবি করে এবং কীভাবে জিয়া মঞ্চের মতো সংগঠনের সভাপতি হয় তা বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে জামসেদুল ইসলাম টুটুল বলেন, আমার অসম্মতিতে আমাকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ হরনী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। পরে আমি লিখিতভাবে তা প্রত্যাখান করেছি। আমি হরণী ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলাম। তৎকালীন আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ অনেক নির্যাতন করেছিল। সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর কাছে যেতে এবং নৌকার পক্ষে ভোট করতে আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল।
জিয়া মঞ্চের হাতিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চন্দ্র দাস বলেন, জামসেদুল ইসলাম টুটুল আমাদের সাথে আগে থেকে জিয়া মঞ্চের রাজনীতিতে জড়িত ছিল। মাঝখানে সে যে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে এসেছে সেটা আমাদের জানা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ছড়াছড়ির পর আমরা উক্ত কমিটি স্থগিত রেখেছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল উদ্দিন রাশেদ বলেন, যারা ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে কাজ করেছে এবং সুযোগ সুবিধা নিয়েছে তারা বিএনপির ছায়াতলে থাকতে পারবে না। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে তার নাম থাকে তা হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং যারা তাকে জিয়া মঞ্চের এ পদে এনেছে তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ ব্যাপারে পরে কথা বলবেন বলে লাইনটি কেটে দেন।
কেকে/এএম