সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫,
৮ বৈশাখ ১৪৩২
বাংলা English

সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
শিরোনাম: রিজার্ভ বেড়ে পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলার      রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ালো ইসি      দুদক দুর্নীতি করে এটা মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না      প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন সুফিউর রহমান      ঝামেলামুক্ত ঈদ উপহার দেওয়ায় কর্মকর্তাদের প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ      ৩ মে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম      শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুনের মধ্যে দাখিলের আদেশ      
গ্রামবাংলা
কালাইয়ে ইজারার পুরো টাকা না দিয়েই হাট দখল, হাসিল আদায়
মো. মোকাররম হোসাইন, কালাই (জয়পুরহাট)
প্রকাশ: রোববার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৫:৫০ পিএম  (ভিজিটর : ৭০)

জয়পুরহাটে কালাই উপজেলা পুনট হাট ইজারার দরপ্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছেন জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এফতাদুল হক। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তিনি ইজারামূল্যের পুরো টাকা পরিশোধ করেননি। এরই মধ্যে হাট দখলে নিয়ে তার কর্মীদের দিয়ে হাসিল আদায় শুরু করছেন তিনি।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, ৭ দিনের মেয়াদ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে গত ২০ ফেব্রুয়ারি, টাকা পরিশোধ করেছেন গত ১৭ এপ্রিল। সর্বোচ্চ দরদাতা বলছেন, চিঠি কত তারিখে পাঠিয়েছে তা বলতে পারব না, তবে প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে আমি পুরো টাকা পরিশোধ করেছি। তবে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ৪নং শর্তে উল্লেখ আছে, যার দরপত্র গৃহীত হবে, দরপত্র সংবাদ অবহিত হওয়ার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে দরপত্রে উল্লেখিত দরের অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ অর্থ এবং মোট দাখিলকৃত দরের অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১০ শতাংশ আয়কর অবশ্যই বিডি/ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে একই সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে, অন্যথায় হাট-বাজারের জন্য জমাকৃত জামানত বাজেয়াপ্ত পূর্বক পুনরায় ইজারা কার্যক্রম গ্রহন করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। এ বিষয়ে নতুন করে কোনো নোটিশ জারি করা হবে না।  

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পুনট হাটের ইজারা দিতেগত ২৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেয় কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।দরপত্রে অংশ নেন তিনজন। তাদের মধ্যে এফতাদুল হকের প্রস্তাবিত ইজারামূল্য ছিল সর্বোচ্চ, ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। হাটের ইজারা সংক্রান্ত টাকা পরিশোধ না করে হাট দখলে নিয়ে হাসিল আদায় শুরু করেছেন। তাই পুনট হাট দরপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া আরেক দরদাতা আহসান হাবিব পলাশ গত ১৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে ওই হাট বাতিল ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুনরায় ইজারা চেয়ে আবেদন করেছেন।

এদিকে দরপত্র যাচাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতা এফতাদুলকে ইজারামূল্যের সঙ্গে অন্যান্য ফি পরিশোধ করতে গত ২০ ফেব্রুয়ারী চিঠি দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। চিঠিতে দরপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া জামানতের বিডি বাদে অবশিষ্ট আরো ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, মোট ইজারা মূল্যের ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১০ শতাংশ আয়করের পুরো টাকা ৭ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়। নিদ্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে দরদাতার জামানত বাজেয়াপ্ত করার বিষয় দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল। তা না হলে দরপত্রের সঙ্গে দেওয়া দরমূল্যের ৩০ শতাংশ জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার চিঠি পাঠানোর ৭ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও এফতাদুলের জামানত বাজেয়াপ্ত করেননি। উলটো নির্ধারিত সময়ে পুরো টাকা পরিশোধ না করেই পুনট হাট দখলে নিয়ে হাসিল আদায় শুরু করেছেন এফতাদুল।  

গত ১৭ এপ্রিল পুনট হাটে গিয়ে দেখা যায়, এফতাদুলের লোকজন হাট পরিচালনা করছেন। পূর্বের তালিকা অনুযায়ী হাসিলের টাকা তারা আদায় করছেন। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো লোকজনকে দেখা যায়নি। এ সময় হাসিল আদায়ের লোকজনরা বলেন, হাটের বর্তমান ইজারাদার যুবদল নেতা এফতাদুল হক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত ১৪ এপ্রিল তাদের কাছে হাট বুঝিয়ে দিয়েছেন। ওই দিন থেকেই তারা হাসিল আদায় করছেন।

পুনট ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুর রহামনসহ বেশকয়েকজন জানান, এফতাদুলের লোকেরাই হাট চালাচ্ছেন। তারা টাকা জমা না দিয়ে হাসিল আদায় করছেন। হাট দরপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, টাকা পরিশোধের চিঠি দিয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু আজো টাকা পরিশোধ করেনি। তাহলে হাটের হাসিল আদায় করে কীভাবে।

নির্ধারিত সময়ে এফতাদুল পুরো টাকা পরিশোধে ব্যর্থ। দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করায় এই হাট পুনরায় ইজারার ব্যবস্থা না করায় গত ১৬ এপ্রিল তৃতীয় দরদাতা আহসান হাবিব পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যান। তিনি এফতাদুলের দেওয়া সর্বোচ্চ দরেই টাকা পরিশোধ করে পুনট হাট ইজারা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। বাধ্য হয়ে গত ১৭ এপ্রিল পুনট হাটের ইজারা বাতিল এবং পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইজারা চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। অনুলিপি তাকেও দেন।  

আহসান হাবিব পলাশ বলেন, আমি নিজে গিয়ে এফতাদুলের সর্বোচ্চ দর দিয়েই হাট নিতে চেয়েছি, কিন্তু তিনি আমাকে পাত্তা দেননি। বাধ্য হয়ে আমি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে ইজারা বাতিল এবং পুনরায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইজারা চেয়ে আবেদন করেছি। আবেদনের অনুলিপি তাকেও দিয়েছি। প্রয়োজনে আদালতে যাব। শেষ দেখেই ছাড়ব।    

দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে টাকা জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা আক্তার জাহান বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতাকে পুরো টাকা পরিশোধের জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়েছে, তিনি গত ১৭ এপ্রিল টাকা জমা দিয়েছে। সে কারণে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। চুক্তির আগে অভিযোগ করলে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হত। যুবদল নেতা ও সর্বোচ্চ দরদাতা এফতাদুল হক বলেন, চিঠি হাতে পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে পুরো টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কত তারিখে চিঠি হাতে পেয়েছেন এবং টাকা জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত তারিখে চিঠি ইস্যু হয়েছে তা আমার জানা নেই, চিঠি হাতে পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে গত ১৭ এপ্রিল টাকা জমা দিয়েছি।

কেকে/এএম


মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গজারিয়ায় পানিতে পড়ে নৌযান শ্রমিক নিখোঁজ
নির্মাণাধীন ভবনের টয়লেট থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
কেরানীগঞ্জে আইওএম’র উদ্যোগে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সভা
রিজার্ভ বেড়ে পৌনে ২৭ বিলিয়ন ডলার
‘আর একবার যদি ছেলের মুখে মা ডাকটা শুনতে পারতাম’

সর্বাধিক পঠিত

পুরুষ হয়ে নারী সেজে টাকা উপার্জনের ধান্দা ‘জুতির মা’
‘অবশেষে নীলফামারীতে হবে চীন সরকারের হাসপাতাল’
লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার
এনসিপির হাত ধরে আ.লীগের পুনর্বাসন
‘আর একবার যদি ছেলের মুখে মা ডাকটা শুনতে পারতাম’

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close